বাংলাদেশে প্রথমবার মানবদেহে বসলো ‘কৃত্রিম হৃদযন্ত্র’
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২২, ০৬:৩৭
দেশে প্রথমবারের মতো ২ মার্চ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক এক রোগীর দেহে ‘কৃত্রিম হৃদযন্ত্র’ এলভিএডি স্থাপন করেন । সেই রোগীর নাম তাশনূভা (৪২)। মেকানিক্যাল হার্ট নিয়েই স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন বলে তাশনূভা প্রতিক্রিয়া জানান।
রোববার (২৭ মার্চ) রাজধানীর সাঁতারকুলের ইউনাইটেড হাউজে আয়োজিত ‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্টের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের সুস্থতার কথা জানান তাশনূভা।
তাশনূভা বলেন, ‘আমি ২০১৬ সাল থেকে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলাম। দেশের বাইরে বহু চিকিৎসা নিয়েছি। তবে খুব বেশি শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। করোনাকালে প্রায় দেড় বছর বাইরে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে না পারায় মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এরপর ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের পরামর্শে ও চিকিৎসায় বর্তমানে সুস্থ আছি।
সার্জারির নেতৃত্ব দেওয়া ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সেন্টারের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবীর তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে এই সার্জারি প্রথম হলেও বিশ্বে অনেক আগেই হয়েছে। আমাদের দেশের রোগীদের অনীহা ও খরচের কারণেই এতদিন এরকম অপারেশন সম্ভব হয়নি। দেশের ডাক্তাররাও যে বিশ্বমানের, তারাও যে অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা সফলভাবে করতে পারেন- এই সার্জারি আমাদের সেই সক্ষমতার প্রকাশ।’
ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘আজ থেকে ২০ বছর আগেও বেসরকারি হাসপাতালে হার্টের চিকিৎসা-সার্জারির জন্য আমরা হার্টের রোগী পেতাম না। সরকারি হাসপাতাল ছাড়া কোথাও এই চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না। রোগীরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যেতেন। মানুষের আস্থা আনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। বেসরকারি পর্যায়ে আমাদের সে অবস্থা ছিল না। তখন থেকে আমি, আমরা আস্থার একটা পরিবেশ তৈরিতে কাজ করেছি। বাংলাদেশের অনেক বেসরকারি হাসপাতালে এখন হার্টের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আমরা সর্বাধুনিক অনেক সার্জারি করছি।’
উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ মাত্র ৪২ বছরের একজন হার্ট ফেইল্যুর নারীর দেহে সফলভাবে অস্ত্রোপচার করে মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সেন্টারের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবীরের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক। অপারেশনের ছয় দিন পর (৮ মার্চ) ওই রোগী হাঁটতে শুরু করেন। ১২ মার্চ তাকে জেনারেল কেবিনে শিফট করা হয়। ১৪ মার্চ তিনি সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করতে পারেন। ২৪ মার্চ তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করা হয়। এমন জটিল একটি অপারেশনের পরে মাত্র ২৫ দিনের মাথায় (২৭ মার্চ) সেই রোগী সাংবাদিকদের সামনে এসে তার শারীরিক অবস্থার কথা বর্ণনা করেন। বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।
এনএফ৭১/আরআর/২০২২
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।