নেতারা বলছেন, সব বাধা পেরিয়ে সমাবেশ ‘জনস্রোতে’ পরিণত হবে

‘বিচ্ছিন্ন’ খুলনা যেন বিএনপির মিছিলের নগরী, সীমাহীন জনদুর্ভোগ

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২২, ০১:৩৬

খুলনা সমাবেশে বিএনপির জনস্রোত

শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুর দুইটায় মহানগরের সোনালী ব্যাংক চত্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ। বিভাগীয় এই সমাবেশে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা । ভোর থেকেই শ্লোগান ও মিছিলে মুখরিত হয়ে ওঠে নগরীর ডাকবাংলোর মোড় থেকে শিববাড়ীর মোড়। সব মিলিয়ে সমাবেশস্থলে দেখা যাচ্ছে উৎসবমুখর পরিবেশ।

আজ ভোরের আলো ফুটতেই দলটির নেতাকর্মীরা নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সোনালী ব্যাংক চত্বরের সমাবেশ অভিমুখে রওনা হন। সমাবেশে যেতে বাধা দেওয়া হবে এমন আশঙ্কায় অনেকে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই সমাবেশস্থলে অবস্থান করছেন। তাদের কেউ কেউ মাদুর ও পত্রিকা বিছিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করেছেন।

এদিকে, দুদিনব্যাপী ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি এবং দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ট্রাক, মাইক্রোবাস ও ট্রলারে করে খুলনায় আসছেন। নগরীর পাওয়ার হাউস মোড়, রেলস্টেশন এলাকায় মিলিত হয়ে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যাচ্ছেন তারা। পিকআপে করে খাবার ও পানীয় সরবরাহ করা হচ্ছে।

বিএনপির সমাবেশের উত্তাপে এখন সরগরম খুলনা। অজানা আতঙ্কে রয়েছেন নগরবাসী, প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকেও বের হচ্ছেন না।

খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ সম্পন্ন করতে সিকিউরিটি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি থাকবে। পাশাপাশি সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক।

খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, একটা সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার এবং পুলিশের এমন তাণ্ডব খুলনাবাসী কখনও দেখেনি। নেতাকর্মীদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে, তাদের আটক করা হচ্ছে। ট্রেনে যারা সমাবেশে এসেছেন তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এভাবে সমাবেশ ঠেকানো যাবে না।

বিএনপির নেতারা বলছেন, সমাবেশে যেতে অনেক বাস ও মাইক্রোবাসের ভাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বাস মালিকরা অগ্রিম যে টাকা নিয়েছিল, তা ফেরত দিচ্ছেন। এসব করে গণসমাবেশ প্রতিহত করতে পারবেন না।

এরআগে, গণসমাবেশে যোগ দিতে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাতে খুলনা শহরের সোনালী ব্যাংক চত্বরে পৌঁছান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান।

খুলনা মেট্টোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মাসুদুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, শহরের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়নি। সমাবেশস্থলে কিছু লোকজন আসছে। শহরের বিভিন্ন এলাকার দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে। পুলিশ সতর্ক নজরদারি করছে। প্রতিটি পয়েন্ট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই নয়, সামগ্রিকভাবে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। নগরবাসীর উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজনীয় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ও টহলে রয়েছেন।

খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মী হত্যা, হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের পর আজ খুলনা বিভাগীয় শহরে দলটির তৃতীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top