জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত

রাজিউর রেহমান | প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৩, ২৩:০৬

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন।

স্থানীয় সময় বুধবার (১৪ জুন) প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় বলে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মুহিত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে শান্তি সংস্কৃতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।

মুহিত বলেন, ‘সহিংসতা ও সংঘাত উত্তরণে সংলাপ ও সম্প্রীতির মাধ্যমে শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি জরুরি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদের সরকারের সময় ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ এটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন এবং এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি ফোরামের আয়োজন করে আসছে।

২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়। ন্যায়বিচার, সাম্যতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করার জন্য শান্তির সংস্কৃতির রূপান্তরমূলক ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয় এই উচ্চ সভাটিতে।

এবারের রেজুলেশনটি বিশ্বব্যাপী নানাবিধ ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘের কেন্দ্রীয় ভূমিকায় সকল সদস্য রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর আলোকপাত করে।

এটি সর্বস্তরে প্রতিরোধমূলক কূটনীতি ও সংলাপ জোরদার করার ওপর জোর দেয়। সংঘাত প্রতিরোধ ও সমাধানে নারীর অগ্রণী ভূমিকার পুনর্ব্যক্ত করে এটি এই ধরনের প্রক্রিয়ায় নারীদের পূর্ণ, সমান ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া, রেজুলেশনটি সহিংসতা ও সংঘাতের অন্তর্নিহিত কারণগুলো চিহ্নিত করে তা মোকাবিলা করার এবং চলমান ডিজিটাল রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতিকে আরও উন্নীত করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেয়।

রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রেজুলেশনটির প্রাসঙ্গিকতা বহুগুণে বেড়েছে। এর ফলে জাতিসংঘের প্রধান প্রধান কার্যাবলীতে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি বৃহত্তর পদচিহ্ন রাখতে পেরেছে এবং একটি প্রভাব সৃষ্টিকারী রেজুলেশনে পরিণত হতে পেরেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে এটি একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত, যা বিশ্বশান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘ সনদের দায়বদ্ধতার পরিপূরক হিসেবেও ভূমিকা রেখে চলেছে।’

এ বছর ১০০টির বেশি দেশ বাংলাদেশের এই রেজুলেশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে, যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণা এগিয়ে নিতে একটি ব্যাপক সমর্থন হিসেবে বিবেচিত। রেজুলেশনটির প্রতি অব্যাহত এই সমর্থন এবং প্রতিবছর সর্বসম্মতভাবে এটি গ্রহণ, শান্তির প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় ধরনের আস্থারই সাক্ষ্য বহণ করে।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top