ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০২৩, ০১:০৯
ঢাকা-১৭ আসন উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা। সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। উপ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনি এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন। সংস্থাটির দাবি, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল।
এদিকে এ উপনির্বাচনের পাশাপাশি সোমবার দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল থেকে এই নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন অংশে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এরফলে ভোটারের উপস্থিতিও ছিল বেশ কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি কিছুটা বাড়ে, যদিও তা সন্তোষজনক নয়। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ তুলে ধরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, মূলত অল্প সময়ের জন্য এই নির্বাচন হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কম।
এদিকে ঢাকা- ১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট চলাকালে মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম। দুপুরের দিকে তিনি বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে মারধরের শিকার হন। ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে বাইরে অবস্থান করা একদল লোক ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার করে তাকে মারধর করে।
এর আগে বিভিন্ন কেন্দ্রে নিজের এজেন্টদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হিরো আলম। বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে হিরো আলম বলেন, যেহেতু আমার এজেন্টের গায়ে হাত দিয়েছে, তাহলে আমার গায়েও যে হাত দেবে না, তার কি নিশ্চয়তা আছে?
অন্যদিকে সকালে ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে বিজয় চিহ্ন দেখান আওয়ামী লগের প্রার্থী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
চলতি বছরের ১৪ মে জনপ্রিয় অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক এমপির মৃত্যুতে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে আসনটি শূন্য হয়। এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আট প্রার্থী। যদিও স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রার্থী তরিকুল ইসলাম ভূঁইয়া সকালেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
অন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীরা হলেন—বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আলী আরাফাত (নৌকা প্রতীক), জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) সিকদার আনিসুর রহমান, স্বতন্ত্র আশরাফুল হোসেন আলম (একতারা), জাকের পার্টির কাজী রশিদুল হাসান (গোলাপ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আক্তার হোসেন (ছড়ি), বাংলাদেশ কংগ্রেসের রেজাউল করিম স্বপন (ডাব) এবং তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান (সোনালি আঁশ)।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঢাকা সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে ১২৪টি ভোটকেন্দ্রের অধীনে ৬০৫টি ভোটকক্ষের মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ২৫ হাজার ২০৫। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭১ হাজার ৬২৫ জন ও নারী ভোটার এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০ জন।
১ জুন নির্বাচন কমিশন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। যা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ওরফে ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হয়।
এ ছাড়া আজ সাতটি পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৌরসভাগুলো হলো—পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া, কুমিল্লার দেবিদ্বার, চাঁদপুরের ছেংগারচর, যশোরের বেনাপোল, চট্টগ্রামের দোহাজারী, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ। পৌরের এসব ভোটে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে।
সাতটি পদে মোট ৩৩ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যেখানে সাতটি পৌরসভায় ২১টি সংরক্ষিত আসনের জন্য ১০২ জন মহিলা প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ৬৩টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৬৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। এ ছাড়া সোমবার কয়েকটি স্থানীয় সংস্থা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ এবং জেলা পরিষদের শূন্য পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।