ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে শরীয়তপুরে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারী ২০২৪, ১৮:৩০
শরীয়তপুরের ডামুড্যাতে ফিরোজা বেগম নামের এক নারীকে দল বেধে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডিত প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সোহেল আহমেদ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে এ রায় দেন। শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সানাল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতর হলেন- নিজাম বালী (৪৫), মোহাম্মদ আলী (৩৫), ওমর ফারুক বেপারী (২৪), আল আমীন বেপারী (২০) ও ইব্রাহীম মোল্লা (২১)। আসামিরা সবাই ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ শীতলকাঠী এলাকার বাসিন্দা।
রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকেলে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাজার এলাকার ৫৫ বছর বয়সী ফিরোজা বেগম। ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরের দিন ওই নারীর ছোট ভাই লাল মিয়া সরদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শরীয়তপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।
আসামিদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। বাকি আসামিদের চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে ২৮ এপ্রিল ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিজাম বালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা আদালতে স্বীকার করেন।
আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তারা। আর অন্য দুই আসামি ইব্রাহিম ও আল-আমিন পলাতক আছেন। আর ওমর ফারুক জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তীকালে পুলিশ ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ হত্যা ও ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। নিহত ফিরোজা বেগমের ছেলে ডা. শাহ জালাল হাওলাদার বলেন, ‘আমরা রায়ে খুশি হয়েছি। সরকারের কাছে দাবি দ্রুত যেন এই রায় কার্যকর হয়।’
শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সানাল মিয়া বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের রায়। এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই মামলায় পাঁচজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।’
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।