বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার না চাইলে এখনই নির্বাচন দিয়ে দেবো: ড. ইউনূস

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:২০

ছবি: সংগৃহীত

রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার না চায় তাহলে এখনই জাতীয় নির্বাচন দিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সংস্কারের ধরন ও পরিধি নির্ধারণ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলো কত দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে তার ওপর নির্ভর করবে সংস্কারের সময়সীমা। কারণ রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচন সম্পূর্ণই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের বিষয়, কারণ দেশের জনগণের প্রত্যক্ষ মতামত নিতে হলে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।’ নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্কার যত দ্রুত হবে, নির্বাচনও তত দ্রুত হবে। আর যদি রাজনৈতিক দলগুলো বলে যে তারা সংস্কার চায় না, তাহলে এখনই নির্বাচন দিয়ে দেব।’

নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্র্বতী সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে নির্বাচনের পথ তৈরি করবে। আমরা কোনো কিছুই চাপিয়ে দিচ্ছি না। তার প্রশাসন কেবল প্রক্রিয়াটি সহজ করার জন্য কাজ করছে।’

নির্বাচনের রোডম্যাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা সমান্তরালভাবে দুটো রাস্তায় চলছি। সমান দৃষ্টিভঙ্গি, সমান প্রচেষ্টা দুটোর পেছনেই থাকবে—একটি হলো নির্বাচন, অপরটি সংস্কার।’ ‘দু-একদিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন ঘোষণা হয়ে যাবে। কমিশন তার মতো চলবে। সেটা তো আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। সেখানে যা যা দরকার সেটা হবে’ যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা না দেওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কাজ শুরু করতে পারবে না। প্রতিবেদন হলেই সেটা কমিশন ব্যবহার করতে পারবে না, (রাজনৈতিক) সমঝোতা হতে হবে।’

ড. ইউনূস জানান, ‘ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। কিন্তু প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হলে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে। সমঝোতার চেষ্টা চলতে থাকবে, কোনটা তারা চান, কোনটা চান না। আমরা কিছুই চাপিয়ে দেব না। গণমাধ্যমে সম্পাদকীয় লেখা হবে, তাদের মতামত আসবে। সুশীল সমাজের মতামত নেব।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি আমাদের বলে, দরকার নেই, যেভাবে আছে সেভাবেই (নির্বাচন) করে দেন, আমরা করে দেব। এটা প্রস্তুত থাকবে। (সংস্কার) প্রস্তুতি নিতে কতদিন লাগবে সেটা সবার বিবেচনার বিষয়। নির্বাচনের জন্য হয়তো প্রস্তুত কেউ হলোই না। সংস্কারের আগেই সবাই যদি বলে নির্বাচন দিয়ে দেন, দিয়ে দেব। আমরা কে এটাকে বাধা দেওয়ার।’

সংস্কারের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘কমিশনগুলোর প্রতিবেদন ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ পাওয়া যেতে পারে এবং আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য সরকার যথেষ্ট সময় পাবে। এটি পুরোপুরি রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করছে। 'আমাকে জিজ্ঞাসা করে লাভ নেই যে কতদিন লাগবে।’

সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে আলোচনা হবে, সেখানে আওয়ামী লীগ থাকবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। যদি তারা চায় যে আওয়ামী লীগ এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিক, তাহলে সেটাই হবে। আমাদের বিশেষ কোনো মতবাদ দিচ্ছি না।’

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top