রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সীমান্তে দুর্নীতির কারণে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আটকানো কঠিন হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৪৭

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক নিয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছে তখন নতুন করে আর একজন রোহিঙ্গাকেও ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে হয়েছে। তবে দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছেই। এই দুর্নীতির কারণে স্থল, জলসীমাসহ সীমান্তের নানা রুট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আটকানো খুব কঠিন হচ্ছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

সম্প্রতি প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে ঢুকেছে। তারা কীভাবে ঢুকেছে, কেন তাদের ঢুকতে দেওয়া হলো এসব ব্যাপারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, অনেকটা বাধ্য হয়ে সরকার তাদের ঢুকতে দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সীমান্তে দুর্নীতির মাধ্যমেও রোহিঙ্গারা ঢুকেছে।

এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকে পড়ছে। এটা আটকানো খুব কঠিন। আমাদের নীতিগত অবস্থান ছিল আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেব না। তবে পরিস্থিতি কখনো কখনো এমন দাঁড়ায়, আমাদের কিছু আর করার থাকে না। সে রকম পরিস্থিতিতে আমরা ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দিয়েছি।

তৌহিদ হোসেন বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে যে ঢুকতে দিয়েছি, তাও না। তারা বিভিন্ন পথে ঢুকেছে। আর একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রচুর দুর্নীতি আছে সীমান্তে। এটা সত্য, অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দুর্নীতির মাধ্যমে তারা ঢুকছে। নৌকা নিয়ে ঢুকছে। একটা সীমান্ত দিয়ে যে ঢুকছে, বিষয়টি এমনও না, বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ঢুকছে। এটাকে আটকানো খুব কঠিন হয়েছে।

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পুরো অঞ্চলে কীভাবে অশনিসংকেত সৃষ্টি করছে, তা জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এখন বয়স্ক যেসব রোহিঙ্গা আছেন, তাঁরা হয়তো পরিস্থিতি মেনে নেবেন। তবে আগামী ৫ বছর পর যেসব তরুণ রোহিঙ্গার বয়স ২০ বছর হবে, তাঁরা বেপরোয়া হয়ে উঠবেন। তখন আমাদের সমস্যা বেশি হবে ঠিকই, তবে সেই সমস্যা প্রত্যেকেরই হবে। এর মধ্যেই নৌকায় রোহিঙ্গারা অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘তাঁকে (থান সোয়ে) বলেছি মিয়ানমার সীমান্তে তো তোমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সীমান্ত তো রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তির (নন–স্টেট অ্যাক্টর) নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাষ্ট্র হিসেবে তো আমরা নন–স্টেট অ্যাক্টরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি না। কাজেই তাদের দেখতে হবে কোন পদ্ধতিতে সীমান্ত ও রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

মিয়ানমার সীমান্তবর্তী স্ক্যাম সেন্টারের অনেকটি চীন নষ্ট করে দিয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এখন স্ক্যাম সেন্টারগুলো মূলত থাইল্যান্ড ও লাওসের সীমান্তে আছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘এসব সেন্টারে অনেক বাঙালি আটকে পড়েছেন। সবাই যে পাচারের মাধ্যমে গেছেন, তা কিন্তু নয়। অনেকেই লোভে পড়ে সেখানে গেছেন।’



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top