২০২৪ সালের বাংলাদেশ: যারা ছিলেন পরিবর্তনের নেপথ্যে
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪:১৫
২০২৪ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে যায় এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন। রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে, আর ক্ষমতার মঞ্চে আবির্ভাব ঘটে নতুন নেতৃত্বের। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াই ও আত্মত্যাগ গোটা বিশ্বকে চমকে দেয়, বাংলাদেশকে এনে দেয় বর্ষসেরা দেশের স্বীকৃতি।
এই বিপ্লবের নেপথ্যে ছিলেন আবু সাঈদের আত্মত্যাগ, নাহিদ ইসলামের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের অবদান। ছাত্রশিবিরের নেপথ্য সমর্থন, প্রবাসী সাংবাদিকদের জনমত গঠন এবং সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। যেসব ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা অনুঘটক ২০২৪ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-
আন্দোলনের স্ফূলিঙ্গ: শহীদ আবু সাঈদ
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয় মূলত রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনার মধ্য দিয়ে। ১৬ জুলাই আন্দোলনে দুই হাত প্রসারিত করে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বন্দুকের নলের মুখে বুক পেতে দিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী। পুলিশের ছোড়া বুলেটে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আবু সাঈদের মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দ্রোহের আগুন হয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
১৬ জুলাই দুপুরে পুলিশের বুলেটের সামনে এভাবেই বুক পেতে দেন রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে সবার মুখে মুখে ২০২৪ সালে সবচেয়ে আলোচিত নাম ছিল আবু সাঈদ। বাংলাদেশে স্বৈরাচারের পতন এবং প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে আবু সাঈদের আত্মত্যাগ এখন পাঠ্য বইয়েও স্থান পেয়েছে।
বলিষ্ঠ নেতৃত্ব: নাহিদ ইসলাম
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তালিকায় এক নম্বরে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম। আন্দোলনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনী শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম নির্যাতন করে। ৩ আগস্ট তিনিই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্র্বতী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান নাহিদ ইসলাম।
বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য সুখ্যাতি পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই বিশ্বের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে টাইম ম্যাগাজিনের ‘টাইম-১০০ নেক্সট’- ২০২৪-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন নাহিদ ইসলাম।
আন্দোলনে নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে নেতৃত্ব দেন আসিফ মাহমুদ, হাসনাত আবদুল্লাহ, সাজিস আলম, উমামা ফাতেমা, নুসরাত তাবাসসুম, আবু বাকের মজুমদার, আবদুল হান্নান মাসুদ, রিফাত রশিদ এবং মাহিন সরকারসহ অনেকে।
তবে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নিয়ে যখন ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আন্দোলনের প্রত্যাহার ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন আত্মগোপনে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আব্দুল হান্নান মাসউদ, আব্দুল কাদির, রিফাত রশীদ ও মাহিন সরকার।
নেপথ্যের শক্তি: ছাত্রশিবির
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু থেকেই ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা দল-মত ভেদাভেদ ভুলে অংশ নিয়েছিলেন। শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণি-পেশা মানুষদের সম্মিলনেই একটি সফল গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সমন্বয়করা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করেন।
তবে প্রথম সারির ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর আন্দোলন যখন বেহাত হয়ে যাচ্ছিল, তখন নেপথের শক্তি হিসেবে আন্দোলনে রসদ জোগায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির। বিশেষ করে ডিবি কার্যালয়ে ছয় সমন্বয়ককে জোর করে যখন আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন ৯ দফা প্রণয়ন করে বাহিরে থাকা সমন্বয়কদের দিয়ে ঘোষণার মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে ছাত্রশিবির। এই সমন্বয়কদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকারও ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম।
৮ আগস্ট বঙ্গভবনের দরবার হলে অন্তর্র্বতী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমসহ সংগঠনটির সাবেক নেতারা। তাদের সঙ্গে ছবিতে রয়েছেন সমন্বয়ক আব্দুল কাদের।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ তাদের সাবেক কয়েকজন দায়িত্বশীলদের নিয়ে এই ৯ দফা প্রস্তুত করেন। ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউটের সময় সাদিক কায়েম ও ফরহাদরাই নয় দফা সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেন। এই নয় দফাই পরবর্তীতে সরকার পতনের এক দফায় রূপ নেয়। ৯ দফা যে শিবিরই প্রণয়ন করেছিল, তা সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে স্পষ্ট করেছেন।
এ ছাড়া ‘মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে অনলাইনে প্রচার’ , 'রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ', গায়েবানা জানাজা, 'লং মার্চ টু ঢাকা' ইত্যাদি অভিনব কর্মসূচি প্রণয়নে শিবির ভূমিকা রাখেন বলে সাদিক কায়েম দাবি করেন। যদিও এ বিষয়ে সমন্বয়করা কোনো প্রত্যুত্তর দেননি।
দুর্দিনের কান্ডারি: প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (পুসাব)
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পর ঢাকায় আন্দোলন যখন স্তিমিত হয়ে যাচ্ছিল, তখন আন্দোলনকে চাঙ্গা রাখতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হলো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (পুসাব)। এই প্ল্যাটফর্মের ডাকে দুর্দিনে রাস্তায় নামেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যখন রাস্তায় নামলে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন তারা। আন্দোলনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হন।
রংপুরে আবু সাঈদ ও চট্টগ্রামে ওয়াসিম আকরাম হত্যার প্রতিবাদে ১৭ জুলাই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ও লাঠিপেটা।
রংপুরে আবু সাঈদ ও চট্টগ্রামে ওয়াসিম আকরামের মৃত্যুর পর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেন। বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় সংঘর্ষ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনাও এর অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডেভিড ডাউল্যান্ড শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
জনমত গঠনে একদল প্রবাসী সাংবাদিক ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনমত গঠনে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করা সাংবাদিকসহ একদল প্রবাসী কনটেন্ট ক্রিয়েটর বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন শফিকুল আলম, যিনি গত দুই দশক ধরে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপিতে কাজ করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ দিকে সারাদেশে যখন ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট, শফিকুল আলমের কাছে তখন ইন্টারনেট অ্যাকসেস ছিলো। তিনি স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের মাধ্যমে পুরো বিশ্বে বাংলাদেশে চলমান হত্যাযজ্ঞ ও বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেন। ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হন।
২০২৪ সালে বাংলাদেশের গতিপথ পাল্টে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রনায়কদের আরেকজন হলেন-সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বাচন জালিয়াতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা নিয়ে প্রায়ই জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউসের প্রেস কনফারেন্সে প্রশ্ন করতেন তিনি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের শেষ কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন তিনি।
আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে বাংলাদেশের মানুষকে যাদের সংবাদ, লেখনী বা ভিডিও কন্টেন্ট সবচেয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ করেছে, তাদের মধ্যে আলোচিত কয়েকজন হলেন- ফ্রান্স প্রবাসী পিনাকী ভট্টাচার্য, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, আল- জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান, নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনীম খলিল, লেখক ও চিন্তক ফাহাম আব্দুস সালাম ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট শাহেদ আলম।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইয়েদ আব্দুল্লাহর অনুসন্ধানী লেখালেখি, টকশোতে চ্যানেল আইয়ের উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরী সাহসী প্রশ্ন এবং যমুনা টেলিভিশনের কাভারেজ গণঅভ্যুত্থানে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ক্ষোভ
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় প্রবাসীরাও ফুঁসে ওঠেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন তারা। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করতে গিয়ে অনেক প্রবাসী গ্রেপ্তার হন। তবুও থেমে থাকেননি প্রবাসীরা। অনলাইনে প্রচারণার পাশাপাশি রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে পরোক্ষভাবে আন্দোলনে অংশ নেন তারা।
২০ জুলাই আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ওই সময় বাংলাদেশি অনেক প্রবাসীকে আটক করে আমিরাতের পুলিশ। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রবাসীরা বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠানো শুরু করেন। জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের সময় রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ১.৯১ বিলিয়ন ডলার। অথচ আওয়ামী সরকার পতনের পর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে এই দুই মাসে প্রবাসী আয় ২৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার।
মূলত জুলাই মাসে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি অনাস্থা এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দেন।
গণতন্ত্রের লড়াইয়ে নতুন মাত্রা
আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন ও নাগরিকদের ভোটাধিকারহরণসহ অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সেই গণতন্ত্রের লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করে। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ৩ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সমাবেশ করে সাদা দল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে পাশে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন তারা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে আন্দোলনকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। এছাড়া সরকার পতনের এক দফা বাস্তবায়নে সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন।
বিধ্বস্ত জাতির ত্রাণকর্তা: সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে অবস্থান না নিলে দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যেতে পারতো বলে মনে করেন আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা। ৫ আগস্ট আলোর দিশারি হিসেবে আবির্ভূত হন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। দেশের কঠিন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্র করা, দেশের সার্বিক শৃঙ্খলা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ছিলেন অধিকর্তা।
নবযাত্রার নাবিক: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দেশে সৃষ্টি হয় এক অরাজক পরিস্থিতি। এই কঠিন সময়ে শিক্ষার্থীরা শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশে ফিরে জাতির হাল ধরার আহ্বান জানান। ৮ আগস্ট দেশে ফিরে ড. ইউনূস অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
৮ আগস্ট রাতে বঙ্গভবনে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কিছুদিন আগেও যিনি সেই সরকারের রোষানলে পড়ে আদালতের চক্রে ঘুরপাক খেয়েছেন, এবার তিনি দাঁড়ালেন সেই সরকারের শীর্ষ দায়িত্বে। দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে সবার আস্থা অর্জনের চ্যালেঞ্জ নেন ড. ইউনূস। সূত্র: ইত্তেফাক
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।