পশুপাখি ও শিয়ালের অবাদ চলাফেরা, ঘটতে পারে দুর্ঘটনা
শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়ে অরক্ষিত
মনির হোসেন জীবন | প্রকাশিত: ১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৬:২২
দেশের সবচেয়ে বড় আধুনিক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আজ অরক্ষিত। এছাড়া দেশের আটটি বিমানবন্দর রানওয়েতে অসাবধনাবশত বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বিভিন্ন সময় পশু পাখির মৃত্যুর ঘটনা এমনকি দুর্ঘটনা হটেছে। এনিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা ধরনের জল্পনা কল্পনা আলোচনা-সমালোচনা এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃস্টি হয়েছে।
একটাই প্রশ্ন বিমানবন্দর গুলোর রানওয়েতে শিয়াল আসে কোথা থেকে এবং কিভাবে? এছাড়া বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ।
নির্ভরযোগ্য সূত্র নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে জানিয়েছে, বিমানবন্দরের কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করে মানুষ একই সঙ্গে বেড়েছে শেয়াল ও বানরের উৎপাত।
মোট কথায়, দেশের ৮টি বিমানবন্দরের মধ্যে ৫টিই রয়েছে অনেকটাই অরক্ষিত। দেশের বিমানবন্দর গুলো হলো, ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রাজশাহী, সিলেট, যশোর , চট্রগ্রাম, কক্সবাজার , সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দর। স্হানীয় মানুষ ও গরু রাখালরা এসব বিমানবন্দরে ভেতরে অনায়াসে আসাও যাওয়া করতে পারে।
একাধিক সূত্র নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে জানান, শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নয়, গরুকাণ্ডের পর অন্যান্য বিমান বন্দরের অব্যবস্থাপনার চিত্রও ধীরে ধীরে উঠে আসতে থাকে। ঢাকাসহ দেশের ৮ টি অন্যান্য বিমানবন্দর গুলোর দেয়াল টপকিয়ে হরহামেশাই ঘাস কাটতে ঢোকে মানুষ।
অনেক বিমানবন্দরের সীমানাপ্রাচীরের নীচে ফাঁকা, রাতে নেই আলোর সু -ব্যবস্থা। অধিকাংশ বিমানবন্দরের কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করে মানুষ একই সাথে বেড়েছে শেয়াল ও বানরের উৎপাত। মোট কথায়, দেশের ৮টি বিমানবন্দরের মধ্যে ৫টিই রয়েছে অনেকটাই অরক্ষিত। বিমান বন্দরগুলোর যখন এমন হাল, তখন ফ্লাইট পরিচালনা করতে নিশ্চয় সমস্যায় পড়তে হয় পাইলটদের।
শাহজালাল বিমানবন্দর সংলগ্ন দলিপাড়া এলাকার স্হায়ী বাসিন্দা জালাল আহমেদ নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমক বলেন, উঁচু দেয়াল ও কাটা তাঁরের সীমানা প্রাচীর টপকানোর ‘সুব্যবস্থা’ আছে শাহজালাল বিমানবন্দরে। ভেতরে ঢুকে মানুষ ঘাস কাটে।
এছাড়া সীমানাপ্রাচীরের নিচ দিয়ে ফাঁকা। রাতে অনেক জায়গাতে নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। শাহজালাল কাঁটাতারের বেড়া ফাঁকা করে ভেতরে ঢোকে মানুষ। একই সাথে শিয়ালের ও উৎপাত বেড়েছে। পাশাপাশি এখনো গরু চরে। এছাড়া ভেতরে বিরাজ করে অসংখ্য পশুপাখি। যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
তুরাগের দলিপাড়া - বাউনিয়া এলাকার স্হায়ী বাসিন্দা রাসেল খান নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে জানান, শাহজালাল বিমানবন্দরের ভেতরে থাকা শিয়াল ও বানর গুলো খাবার না পেয়ে অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে।
রাস্তা দিয়ে কেউ যদি দোকান থেকে রুটি, কলাসহ যে কোন ধরনের খাবার নিয়ে বাড়ি যায়, তখন তাকে কমান্ডো স্টাইলে আক্রমণ করে সহজেই খাবার কেড়ে নিয়ে যায়। এখানকার বানর গুলো দীর্ঘ দিনের পুরানো। তারা গাছে এবং জঙ্গের ভেতরে লুকিয়ে থাকে। মাঝে মাঝে বাহিরে বের হয়।
আব্দুল্লাহ আল ফারুক নামে বিমানের একজন পাইলট সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের বিমানবন্দর গুলোতে গরু, শেয়াল বা পাখি - পাইলটদের নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি করে। অনেক সময় তারা বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনে।
বিমানের অপর একজন অভিজ্ঞ পাইলট জানান, আমরা বিমানটি এয়ারপোর্টে ল্যান্ডিং করার সময় টাওয়ারের মাধ্যমে রানওয়েকে জিজ্ঞেস করি পাখির কোন এ্যাকটিভিটিজ সেখানে বিচক্ষণ আছে কি না? তখন আমরা বিচলিত হই না, এর কোন কারণ ও নেই। তখন আমরা শান্ত থাকি এবং ধৈর্য ধরি, তবে মনোবল হারাই না।
তিনি আরো বলেন, বিমান নামার সময় রানওয়েতে কোন গরু কিংবা পশু- পাখি থাকবে না, ভেতরে লাইটিং ব্যবস্হা ভাল থাকবে হবে।
এবিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর মহাব্যবস্থাপক জনসংযোগ বোসরা ইসলাম নিউজ ফ্ল্যাশ ৭১ ডটকমকে বলেন, এই বিষয় গুলো দেখার দায়িত্ব হল সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের। তাদের লোকবল আছে। এবিষয়ে তারা ভাল বলতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সম্পাদনা/ রাহুল রাজ
বিষয়: শাহজালাল বিমানবন্দ রানওয়ে
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।