প্যাকেজ অফারে বেশি ঝুঁকছে ক্রেতারা
উৎসবমুখর পরিবেশে জমে উঠেছে বাণিজ্য মেলা
রাহুল রাজ | প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭:১৮
পূর্বাচলে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলছে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মাসব্যাপী এ মেলায় ছুটির দিনগুলোতে হচ্ছে উপচেপড়া ভিড়। দেশি স্টলগুলো ঘুরে দেখার পাশাপাশি ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন বিদেশি স্টলগুলোতেও। উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে বেচাকেনা। গৃহস্থালি সামগ্রী ও খাবারের দোকানের প্যাকেজ অফারে বেশি ঝুঁকছে ক্রেতারা। দাম নিয়েও নেই অভিযোগ। আর প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দর্শনার্থীর সমাগম হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও।
মেলায় মানানসই সব গৃহস্থালি পণ্যের পাশাপাশি মিলছে বাহারি রং এবং ডিজাইনের খাট, পালঙ্ক, টেবিল, চেয়ার, আলমারিসহ হরেক রকমের আসবাবপত্র।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় প্রায় ২০টির মত স্টল ও প্যাভিলিয়ন গৃহস্থালি পণ্যের পসরা সাজিয়েছে।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা ভিড় করছে এসব স্টলে। হাড়ি পাতিল, ইলেকট্রিক মাল্টি কুকার, মাইক্রোয়েভ ওভেন, সসপেন, ওয়াটার ফিলাটার, গ্যাসের চুলা, ননস্টিকি প্রেসার কুকার, হটপট, অ্যালুমিনিয়ামের কারুকাজ করা ট্রে, মগ, গ্লাস, বাটি, বড় থালা, টিফিন বক্সসহ হরেক রকম তৈজসপত্র রয়েছে এসব দোকানকে। তৈজসপত্রগুলোর মধ্যে নতুন ও ব্যতিক্রমী পণ্যের দিকে আগ্রহ বেশি দর্শক-ক্রেতাদের।
মেলা উপলক্ষে ক্রেতাদের বিশেষ অফারে ৩৩ হাজার টাকার ১২ পিস পণ্য সাড়ে ২৪ হাজার টাকায় দেওয়া হচ্ছে। ১২ পিসের মধ্যে রয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির ইটালিয়ন চুলা, ২৮ লিটারের মাইক্রোয়েভ ওভেন, মাল্টি কুকার, কারি কুকার, রাইস কুকার, স্যান্ডউইচ মেকার, পানির ফিল্টার, ৫টি রান্নার হাঁড়ি, ব্যালেন্ডার, রুটি মেকার। এছাড়াও ক্রেতাদের পছন্দমত পণ্য পরিবর্তন করতে নিতে পারবেন।
স্টিলের তৈরি কারুকাজ অ্যানোডাইস ট্রে সেট বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায়। প্রতিটি সেটে তিনটি করে ট্রে রয়েছে। সোনালী রঙের কারুকাজ করা টিফিন ক্যারিয়ারও পাবেন ১ হাজার থেকে ২৫শ’ টাকায়। এছাড়া বিভিন্ন আকার ও ডিজাইনের চামচ সেট ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
মেলায় ১৯৬-১৯৭ নম্বার স্টলে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়ে কুকিজি আইটেমের পণ্য বিক্রি করছে মিয়াকো। হকিস ব্র্যান্ডের ৪ পিস বিভিন্ন আকারের নন-স্টিক পেশারকুকার সাড়ে ৭ হাজার টাকা। মেলা উপলক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করছি মাত্র ৩ হাজার ৭৫০ টাকায়। মিয়াকো থাইল্যান্ডের নন-স্টিক পেশারকুকার, মাইক্রোয়েভ ওভেনেও রয়েছে ৫০ শতাংশ ছাড়। এছাড়া সব ধরনের পণ্যে সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ ছাড়া দেওয়া হচ্ছে।
দেখা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও চাহিদা রয়েছে শোভাবর্ধক ফার্নিচার পণ্য। মেলায় মিলছে বাহারি রং এবং ডিজাইনের খাট, পালঙ্ক, টেবিল, চেয়ার, আলমারিসহ হরেক রকমের আসবাবপত্র।
মেলায় ঘরে ব্যবহৃত আসবাবপত্রের পাশাপাশি অফিস সাজানোর পণ্যও মিলছে প্যাভিলিয়নগুলোতে। এবারের বাণিজ্যমেলা উপলক্ষে ব্র্যান্ডগুলো যেমন নতুন ডিজাইন নিয়ে এসেছে, তেমনি বিশেষ অফারও দিচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন এসব ফার্নিচার দেখতে ও কিনতে বরারবই আগ্রহী থাকেন ক্রেতারা। হল 'এ' এর ডান দিকে রয়েছে ফার্নিচার এবং বামদিকে রয়েছে ইলেকট্রনিকসের প্যাভিলিয়ন।
এদিকে এবারের মেলা উপলক্ষে পারটেক্স, নাদিয়া, নাভানা, আকতার, রিগ্যালসহ সব প্যাভিলিয়নের ফার্নিচারে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়। মেলা উপলক্ষে সব ফার্নিচারে রয়েছে অন্তত ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।
মেলায় কিস্তিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আসবাব কেনার সুযোগও আছে। বিনা সুদে ৩ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে বিভিন্ন ধরনের আসবাবপণ্য কেনার সুযোগ দিচ্ছে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান। তবে এ জন্য ক্রেতাদের ক্রেডিট কার্ড থাকতে হবে।
ওক কাঠের তৈরি ফার্নিচার মেলায় নিয়ে এসেছে রিগ্যাল। হল 'এ' এর প্রবেশ মুখেই রয়েছে তাদের প্যাভিলিয়ন। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এ প্রতিষ্ঠানের আগে থেকেই লেমিনেটেড প্লাইউড ও রড আয়রনের ফার্নিচার রয়েছে। মেলায় তাদের সব ফার্নিচারে ১০ শতাংশ মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আসবাবপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়।
এবারের মেলায় নাদিয়া ফার্নিচার নতুন কিছু বেডরুম সেট, সোফাসেট, ডাইনিং সেট নিয়ে এসেছে। নতুন যেসব পণ্য বাণিজ্যমেলায় এসেছে সেগুলো বিভিন্ন ব্রাঞ্চে পরবর্তীতে যাবে। এসব পণ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড়। এ সুযোগ শুধু মেলা চলাকালীন প্রযোজ্য।
হাতিম ফার্নিচারের একজন সেলসম্যান বলেন, আমরা তিন ধরনের ক্রেতা দেখি। কেউ ভিক্টোরিয়ান পছন্দ করেন, কেউ মডার্ন পছন্দ করেন, কেউ আবার একটু সিম্পল ডিজাইনের আসবাব পছন্দ করেন। আমরা সব ধরনের ডিজাইনের পণ্য আমাদের শোরুমে রাখার চেষ্টা করি।
উল্লেখ্য, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা মাসব্যাপী সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।