মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

মন্ত্রী-সচিব কমানোর পাশাপাশি মন্ত্রণালয় একীভূতের সুপারিশ

বার্তা বিভাগ | প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৩

একীভূতের সুপারিশ

সরকারের মন্ত্রী ও সচিবের সংখ্যা কমিয়ে আনার পাশাপাশি মন্ত্রণালয় একীভূত করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সুপারিশ দেওয়া হলেও বিশ্লেষকরা এর বাস্তবায়নযোগ্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি খাত সংস্কারের লক্ষ্যে পৃথক কমিশন গঠন করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।


প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে, মন্ত্রীর সংখ্যা কমিয়ে ২৩ জন করা, যার মধ্যে ২ জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১২ জন, বর্তমানে সচিব ও সমমর্যাদার ৮০ জন কর্মকর্তার সংখ্যা কমিয়ে ৬০ জনে নামিয়ে আনার সুপারিশ, একাধিক বিভাগ থাকা মন্ত্রণালয়ে মুখ্য সচিব নিয়োগের প্রস্তাব।

বিপিএটিসির সাবেক পরিচালক এ কে এম এনামুল হক এই উদ্যোগকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, সংখ্যা কমানো হলে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হবে, যা প্রশাসনের কার্যকারিতা বাড়াবে। তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা সম্ভব।


তবে, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিজিটিং ফেলো অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম এই সুপারিশগুলোর বাস্তবায়নযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, অনেক সুপারিশ বাস্তবতার ভিত্তিতে নয়, বরং কল্পনার ওপর নির্ভর করে করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই প্রশাসন ক্যাডার ও অন্যান্য ২৯টি ক্যাডারের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়, যা সংস্কার বাস্তবায়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কয়েকটি মন্ত্রণালয় একীভূত করারও সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো হলো, শিল্প, বাণিজ্য এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়কে একীভূত করে 'শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়' গঠন, সড়ক যোগাযোগ, সেতু ও রেল মন্ত্রণালয় একত্রিত করে 'যোগাযোগ মন্ত্রণালয়' গঠন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করার প্রস্তাব।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে সরকার পরিচালনায় খরচ কমার পাশাপাশি প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়তে পারে। তবে, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই অন্তর্বর্তী সরকারকে এই সংস্কার বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top