বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

তসলিমার চুম্বন বিক্রি, জয় বাংলা স্লোগান, জবাবে কী বললেন লেখিকা

রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৪:২১

ছবি: সংগৃহীত

তসলিমা নাসরিন প্রথাবিরোধী যোদ্ধা। তিনি কখনই কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলতে পিছপা হননি। দেশে ফিরতে না পারলেও এখানকার সব আপডেট রাখেন তসলিমা। খুঁটিনাটি সব বিষয়ে নিজের মতামত জানান অকপটে। কিন্তু এবারের বইমেলায় যেটা ঘটল তারপর তিনি আর চুপ করে থাকতে পারলেন না। প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন।

গেল সোমবার সন্ধ্যার ঘটনা। বইমেলায় সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে ভাঙচুর চালান একদল মানুষ। স্টলের বাইরে তখন উত্তেজিত জনতার ভিড়। সব্যসাচীর তরফেই তাঁর বই ছাপানোর অপরাধে ভাঙচুর চালানো হয়।

লজ্জা উপন্যাসের লেখিকা এদিন একটি ভিডিও পোস্ট করেন। লেখেন, আজ জিহাদি ধর্মীয় চরমপন্থীরা বাংলাদেশের বইমেলায় সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে আক্রমণ চালায়। তাঁদের অপরাধ যে তাঁরা আমার বই প্রকাশ করেছে। বইমেলার কর্তারা এবং স্থানীয় থানার পুলিশ এসে তাদের আদেশ দেন আমার বই সরানোর জন্য। সেটা সরিয়ে দেওয়ার পরও চরমপন্থীরা আক্রমণ চালায়, স্টল ভাঙচুর করে, সেটাকে বন্ধ পর্যন্ত করে দেয়।

এরপরই সেই পোস্টে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। লেখেন, সরকার এই চরমপন্থী, জিহাদিদের সমর্থন করছে দেশজুড়ে। শুধু তাই নয়, তিনি এদিন সকালে ফেসবুকের পাতায় একটি পোস্ট করেন। লেখেন, এখন গল্পগ্রন্থ চুম্বনটিও ইউনুস সরকারের সইছে না?

আগের সরকারগুলো যত না স্বৈরাচারী ছিল, এই ইউনুস সরকার তাদের চেয়ে হাজার গুণ বেশি স্বৈরাচারী। সন্ত্রাসীরা যা খেতে চাইছে, সেটাই তাদের খাওয়াচ্ছেন আপনারা। এভাবেই বাক স্বাধীনতার বিপক্ষে, মত প্রকাশের অধিকারের পক্ষে, গণতন্ত্রের বিপক্ষে যাচ্ছেন। এভাবেই সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী করছেন। ধিক।

তসলিমা নাসরিন অভিযোগ করেন। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লেখেন, শতাব্দী ভব তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে তার বাড়িতে বাস করতে পারছে না। এই লজ্জা কার? তসলিমা নাসরিন তার স্ট্যাটাসে লিখেন, শতাব্দী ভব ধনী কোনও প্রকাশক নয়। অতি ক্ষুদ্র এক প্রকাশক। দারিদ্রের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড সংগ্রাম করে বেঁচে থাকে। বহু পরিশ্রম করে সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে ছোট এক প্রকাশনী শুরু করেছিল।

সেখানে তসলিমা নাসরিন প্রশ্ন রাখেন, এখন কী করবে সে?” বইমেলায় সে কি আর যেতে পারবে? স্টলে বসতে পারবে? বই বিক্রি করতে পারবে? তিনি লিখেন, মব ভায়োলেন্স এখন তাদের নিত্য দিনের উল্লাস। তাদের বাধা দেওয়ার কেউ নেই। এই লজ্জা কার? এই লজ্জা মোহাম্মদ ইউনুসের।

যে-বইমেলা মুক্তচিন্তা প্রকাশের পরিসর, সেখানেই সব্যসাচী স্টলে হামলা চালানো হল। এই ঘটনা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে একাধিক প্রশ্নচিহ্নের জন্ম দিয়েছে। মুক্তচিন্তার পরিসর তৈরি করার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top