সরকার-এনসিপির দূরত্ব কী বাড়ছে, অস্বস্তিতে এনসিপি
হাসনাত-সারজিসের পোস্ট নিয়ে নেতাদের মতবিরোধ, উত্তপ্ত এনসিপি
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৩

সমন্বয়ক ও জানাক নেতাদের বক্তব্য ঘিরে আবারো উত্তপ্ত দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যেনও থামছেই না। অনেকে বলছেন, রাজনীতিতে অন্ধকারের কালো মেঘ। দল গঠনের এক মাস না পেরোতেই শীর্ষ নেতারা জড়িয়ে পড়ছেন তুমুল বিতর্কে।
ঘটনার সূত্রপাত গেল বৃহস্পতিবার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ঘিরে জলঘোলা শুরু। ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। এরপরই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের চেষ্টা হচ্ছে বলে আলোচনা শুরু হয়। সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন মহলের দূরত্ব দৃশ্যমান হয়।
সেদিন মধ্যরাতে ফেসবুকে হাসনাত লেখেন, গত ১১ মার্চ তিনিসহ দুজনকে ক্যান্টনমেন্টে ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। হাসনাতের সেই পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড়। বিভিন্নজনের মনে নানা প্রশ্নের উদয়।
জবাবে আসে সেনাসদরের প্রতিক্রিয়া। শনিবার (২২ মার্চ) সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজকে জানানো হয়, হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্ট সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি ছাড়া অন্য কিছু নয়। মন্তব্য করা হয়, হাসনাতের বক্তব্য অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার।
এরপর রোববার (২৩ মার্চ) আসে নতুন চমক। ফেসবুক পোস্টে দলটির আরেক মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম লেখেন, যেভাবে এই কথাগুলো ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এসেছে, এই প্রক্রিয়াটি আমার সঠিক মনে হয়নি। এতে যেকোনো স্টেকহোল্ডারের সাথে আলোচনা আস্থার সংকটে পড়বে।
সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ কমেন্ট করেন সেই পোস্টে। বলেন, এসব কি ভাই। পাবলিকলিই বলছি- দুইজনের একজন মিথ্যে বলছেন। এটা চলতে পারে না। জানতে চান, এভাবে এনসিপিকে বিতর্কিত করা, কাদের এজেন্ডা। স্যরি, আর চুপ থাকতে পারলাম না।
গেল শনিবার মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী- হাসনাতের সেই পোস্টকে অশোভন বলেন। জানান, এটা শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এনসিপির নেতাদের অনেকেই ক্ষোভ জানিয়েছেন। বিভিন্ন গ্রুপে তাদের মধ্যে এই ইস্যু নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে।
সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ লিখেছেন, যদি সেলিব্রিটি ফেইস, কন্ট্রোভার্সি আর পপুলিজম দিয়েই রাজনীতি করতে চান, তাহলে টিকটকারদের এনে বসিয়ে দিন। আরেক নেতা লিখেছেন, একটি দলের সদস্য হয়ে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা অর্জনের রাজনীতি করবেন না। দলের কথাও ভাবতে হবে।
তবে দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেছেন, মতবিরোধ থাকলেও দলের চেতনা রয়েছে অক্ষুণ্ণ। কারও মধ্যে কোনও বিভাজন নেই।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।