বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে খুন:

গৃহকর্মীই একমাত্র সন্দেহভাজন, এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ

মহানগর ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৭

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজেদের বাসায় মা ও মেয়েকে হত্যা করার ঘটনায় ওই বাসায় নতুন নিয়োগ পাওয়া গৃহকর্মী নারীকে একমাত্র সন্দেহভাজন বলে মনে করছে পুলিশ। তবে এখনো ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। চার দিন ধরে তিনি কাজ করলেও কখনো মুখ খোলেননি এবং বোরকা বা মুখ ঢাকা অবস্থায় আসা-যাওয়া করতেন বলে জানিয়েছে পরিবার।

নিহত লায়লা আফরোজ (৪৮) এবং তাঁর মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)–এর মরদেহ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বহুতল ভবনের সপ্তম তলায় নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চার দিন আগে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীর মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে ওই নারীকে কাজ দেন লায়লা আফরোজ। তবে তিনি নিজের পরিচয়, ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর কোনোটিই স্পষ্ট করে জানাননি। সিসিটিভি ফুটেজেও তার মুখ শনাক্ত করা যায়নি, কারণ প্রতিবারই মুখ ঢেকে আসতেন তিনি।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন,
“নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি জানান, গৃহকর্মী তাকে আগে থেকে চিনতেন না। কাজ খুঁজতে আসা ওই নারীকে তিনি লায়লার কাছে নিয়ে যান মাত্র।”

নিহত লায়লার স্বামী আজিজুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। সোমবার সকাল ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে উত্তরায় কর্মস্থলে যান তিনি। পরে স্ত্রীকে বারবার ফোন করেও না পেয়ে বেলা ১১টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত পড়ে আছেন। মেয়েকেও গুরুতর জখম অবস্থায় প্রধান ফটকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

অবস্থার অবনতি হওয়ায় নাফিসাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মামলায় বাদী আজিজুল ইসলাম উল্লেখ করেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়,সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে গৃহকর্মী বাসায় প্রবেশ করে, সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে তাঁর মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়, সাথে নিয়ে যায় একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী। তিনি আরও লেখেন, “ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছি, অজ্ঞাত কারণে ওই নারী স্ত্রী ও মেয়েকে ধারালো অস্ত্রে আঘাত করে হত্যা করেছেন।”

ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের ডিসি ইবনে মিজান বলেন, “গৃহকর্মীর পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এখনও বলার মতো অগ্রগতি নেই। তদন্ত চলমান।”

মঙ্গলবার নাটোর নবাব সিরাজ–উদ–দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে মা–মেয়েকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। মরদেহ এলাকায় পৌঁছালে শোকের মাতমে ভেঙে পড়েন স্বজনরা। জানাজার আগে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনি গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top