• ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


ইসলাম গ্রহণকারী চতুর্থ সাহাবি ছিলেন কে?

নিশি রহমান | প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ২৩:৩০

প্রতীকী ছবি

জাহিলি যুগেই যাঁরা মহান আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দিতেন এবং সত্যের সন্ধানে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন আবু জর গিফারি (রা.)। প্রথম দিকে তাঁর জীবনও ছিল অন্ধকার। গোত্রের অন্যান্য লোকের মতো তাঁরও পেশা ছিল লুট, হাইজাক ও রাহাজানি। তবে কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর জীবনে এক বিপ্লব ঘটে যায়। নাড়া দেয় তাঁর অন্তরাত্মাকে।  তবে তখনো তিনি রাসুল (সা.) নবুয়তপ্রাপ্ত হননি। রাহাজানি ত্যাগ করে ঝুঁকে পড়লেন এক আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে একাগ্রচিত্তে; এমনকি নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে নামাজও আদায় করতে লাগলেন। তাই বলা হয়, আবু জর জাহিলি যুগেই একত্ববাদী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে রাসুল (সা.)-এর সংবাদ পেয়ে ছুটে যান তাঁর কাছে; গ্রহণ করেন ইসলাম। ইসলাম গ্রহণের দিক থেকে তিনি চতুর্থ ব্যক্তি।

আরও পড়ুন>>> জেনে নিন মানবজীবনে তাওবার সুফল

তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাটি খুবই চমকপ্রদ, যা বুখারি শরিফে ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে সবিস্তরে বর্ণিত আছে। তার মর্মানুবাদ এখানে পেশ করা হলো—

আবু জর গিফারি (রা.) একদিন সংবাদ পেলেন, মক্কায় নতুন এক নবীর আবির্ভাব হয়েছে। প্রথমে তিনি তাঁর ভাই উনাইসকে মক্কায় পাঠিয়ে নতুন নবী সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিলেন। পরে নিজেই সামান্য খাবার ও পানীয় নিয়ে রওনা হলেন মক্কার উদ্দেশে। সেখানে গিয়ে ভীত-শঙ্কিত অবস্থায় এক দিন কাটিয়ে দিলেন। শত্রু-মিত্র আশঙ্কায় আবির্ভূত নবী সম্পর্কে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলেন না। দিন শেষে রাত এলে তিনি ক্লান্ত-শ্রান্ত বদনে শুয়ে পড়লেন মসজিদে হারামের এক কোণে। আলী (রা.) তাঁকে দেখে পরদেশি মুসাফির হিসেবে নিয়ে গেলেন নিজ বাড়িতে। উত্তম থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করলেন। তবে উভয়ের মধ্যে পরিচয় পর্বও হলো না এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কেও কোনো মতবিনিময় হলো না।

সকাল হলে আবু জর গিফারি (রা.) ফিরে এলেন মসজিদে। আজকের দিনটিও কেটে গেল; কিন্তু নবীর সঙ্গে পরিচয়ের কোনো ব্যবস্থা হলো না। রাত হয়ে গেল। গতকালের মতো আজও মসজিদে শুয়ে পড়লেন। আলী (রা.) আজও তাঁকে দেখে নিয়ে গেলেন বাড়িতে। থাকা-খাওয়ার উত্তম ব্যবস্থা করলেন। এদিনও কেউ কাউকে কোনো কথা জিজ্ঞেস করলেন না। একইভাবে তৃতীয় রাতে আলী (রা.) মুসাফির আবু জরকে বাড়িতে নিয়ে মেহমানদারি করলেন। তবে আজ মুখ খুলে জিজ্ঞেস করলেন তাঁর উদ্দেশ্যের কথা।

আবু জর তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে সহযোগিতার শর্তে আলী (রা.)-কে মনের কথা খুলে বললেন। তাঁর বক্তব্য শুনে আলী (রা.)-এর মুখমণ্ডল আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে গেল। হৃদয় ভরে গেল অপূর্ব হর্ষ ও পুলকে। বললেন, আল্লাহর কসম! তিনি তো নিশ্চিত সত্য নবী। এই বলে তিনি বিভিন্নভাবে নবীজির পরিচয় তুলে ধরলেন। আর বলেন, সকালেই আমি আপনাকে নবীজির কাছে নিয়ে যাব। তবে সাবধানে ও সুকৌশলে পথ চলতে হবে। তাই নিরাপদ দূরত্বে থেকে আপনি আমাকে অনুসরণ করে পথ চলবেন। আমি যেখানে প্রবেশ করব, আপনিও সেখানে প্রবেশ করবেন। আশঙ্কাজনক কোনো কিছু দেখলে আমি প্রস্রাবের ভান ধরে বসে যাব। আপনি আপনার গতিতে চলতে থাকবেন। আবার আমার অনুসরণ করবেন।

পরের দিন আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-এর বাড়িতে গেলেন। সাক্ষাৎকালে তিনি রাসুল (সা.)-কে ইসলামী কায়দায় সালাম দিলেন। রাসুল (সা.) তাঁকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। কয়েকটি আয়াত পড়ে শোনালেন।

আবু জর (রা.) সেখানেই তাওহিদের কলেমা পাঠ করে ইসলাম গ্রহণ করলেন। ইসলাম গ্রহণের পর রাসুল (সা.) তাঁকে বললেন, তুমি আপাতত নিজ এলাকায় ফিরে যাও। সেখানকার লোকজনকে ইসলামের দাওয়াত দাও। আমার খোঁজখবর রাখবে। সে মোতাবেক ভবিষ্যতে যা করার করবে।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top