মার্কিন নাগরিকের আইফোন পেয়ে ফেরত দিলেন রিকশাচালক
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৮ আগষ্ট ২০২২, ০৬:৪৩
রিকশাচালকের নাম আমিনুল ইসলাম। তিনি রিকশা চালান রাজধানীর গুলশান এলাকায়। ৫ আগস্ট রিকশায় যাত্রী বসার গদির ফাঁকে বন্ধ অবস্থায় তিনি একটি মুঠোফোন (আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স) পান। ৯ আগস্ট পুলিশের মাধ্যমে মুঠোফোনটি তিনি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন।
আমিনুল বলেন, মুঠোফোনটি বন্ধ অবস্থায় ছিল। চার্জ না থাকায় চালু করা যাচ্ছিল না। ফলে মুঠোফোনটির মালিক কে, তা বুঝতে পারছিলেন না।
মুঠোফোনটির মালিককে খুঁজে বের করাতে তা চালু করার দরকার ছিল। তাই তিনি উত্তর বাড্ডার একটি দোকানে গিয়ে চার্জার কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু দোকানদার চার্জারের দাম অনেক বেশি চান। তাই তিনি চার্জার না কিনে ফিরে আসেন।
পরে তিনি মুঠোফোনটির সিম খুলে ফেলেন। নিজের মুঠোফোনে সিমটি চালু করেন। সিম চালু করার পর এক নারীর ফোন আসে। তিনি মুঠোফোনটির মালিকানা দাবি করেন। তখন তিনি ওই নারীকে মুঠোফোনটি নিয়ে যেতে বলেন। পরে তিনি পুলিশের মাধ্যমে মালিকের কাছে মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেন।
আজ বুধবার সীমা আহম্মেদ নামের ওই নারী জানান, মুঠোফোনটি তাঁর ছেলে স্যামি আহম্মেদের। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন। সেদিন তিনি ছেলেকে নিয়ে রিকশায় করে রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। পথে মুঠোফোনটি হারিয়ে ফেলেন। মুঠোফোনে চার্জ ছিল না। তাই কলও করা যাচ্ছিল না।
পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। একপর্যায়ে সিম চালু পান। ফোন করলে এক রিকশাচালক ধরেন। তিনি মুঠোফোনটি পাওয়ার কথা জানান। মুঠোফোনটি নিয়ে যেতে বলেন। তাঁরা পুলিশকে এ তথ্য জানান। পরে আমিনুল পুলিশের কাছে মুঠোফোনটি পৌঁছে দেন। মুঠোফোন ফিরে পেয়ে তাঁরা বেশ খুশি।
গুলশান থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল কাদির বলেন, ‘আমি প্রায় সাত বছরে সাড়ে চার হাজার মুঠোফোন উদ্ধার করেছি। কিন্তু কখনোই এমন সততার দৃষ্টান্ত দেখিনি। আমাদের সবার আমিনুলের কাছ থেকে শেখা উচিত।’
আমিনুল জানান, তাঁর গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। ৮ বছর ধরে গুলশান এলাকায় রিকশা চালান। স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে তিনি থাকেন বাড্ডা এলাকায়। জেসমিন একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের দুই সন্তান আছে। তারা নানির কাছে থেকে লেখাপড়া করে।
আমিনুল বলেন, তিনি গরিব। সংসারে অভাব আছে। কিন্তু অন্যের সম্পদের ওপর তাঁর কোনো লোভ নেই। সততা নিয়েই বাঁচতে চান তিনি। খবর প্রথম আলোর।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।