বাংলাদেশে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে: বিশেষজ্ঞের সতর্কবার্তা
বাসস | প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:২৮

বাংলাদেশের গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় বজ্রপাতের ঘনত্ব ও তীব্রতা আগামীতে আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, প্রাথমিক প্রতিরক্ষা অবকাঠামোর অভাবে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে কৃষি ও মাছ ধরার কাজে নিযুক্ত সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “চলমান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ঘন ঘন বজ্রপাতজনিত দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত এবং বিজলি চমকানোর হার আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। পূর্বে যেখানে বজ্রপাত কম ঘটত, সেসব এলাকায়ও এখন ঝুঁকি বাড়ছে।”
ড. মান্নান উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর প্রায় ৩০০ জন মানুষ বজ্রপাতে মারা যান। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে বজ্রপাতের ঘনত্ব এবং তীব্রতা বেড়েছে, যা দেশের জন্য বড় ধরণের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।”
তিনি আরও জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাক-বর্ষা মৌসুমে কনভেক্টিভ অ্যাভেইলেবল পটেনশিয়াল এনার্জি প্রায় ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বজ্রপাতের তীব্রতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। পাশাপাশি, বায়ুর মান খারাপ হওয়া, দূষণের বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ এলাকায় লম্বা গাছ কেটে ফেলার প্রভাবও ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও সিলেট জেলা সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতজনিত মৃত্যুর শিকার হয়। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বর্গকিলোমিটারে বছরে প্রায় ১২০টি বজ্রপাতের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যার এক-তৃতীয়াংশ সরাসরি মাটিতে আঘাত হানে।
ড. মান্নান সতর্ক করেছেন, বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রাক-বর্ষা মৌসুমে বজ্রপাতের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। তিনি জনগণকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রাথমিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।