শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সাহিত্যে নোবেল পেলেন অ্যানি এরনাক্স

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২২, ০৬:৩৮

অ্যানি এরনাক্স

২০২২ সালে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন ফরাসি সাহিত্যিক আনি ইয়াখনু। বৃহস্পতিবার সুইডেনের স্টকহমে নোবেল কমিটি তার নাম ঘোষণা করে।

তার বেশিরভাগ সাহিত্যকর্মই আত্মজীবনীমূলক। সমাজ বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

নোবেল কমিটির স্থায়ী সদস্য ম্যাটস মাম বলেছেন, আনি ইয়াখনু যে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন সেটি তিনি জানেন না। তবে আনি দ্রতই এ খবর পাবেন বলে জানান ম্যাটস মাম।

নোবেল কমিটি তাদের ঘোষণায় বলেছে, অ্যানি তার লেখনিতে সাহস এবং ‘ক্লিনিক্যাল’ তীক্ষ্ণতা প্রদর্শন করেছেন। এর সাহায্যে তিনি ব্যক্তিগত স্মৃতির শিকড়, বিচ্ছিন্নতা এবং সম্মিলিত সংযমের উন্মোচন করেছেন। ফরাসি এই লেখক তার লেখায় ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কোণ থেকে লিঙ্গ, ভাষা ও শ্রেণি সম্পর্কিত শক্তিশালী বৈষম্য দ্বারা চিহ্নিত জীবনকে নিয়ে পরীক্ষা করেছেন। লেখিকার এই জীবন দীর্ঘ এবং কঠিন ছিল।

আনি ইয়াখনু তার সাহিত্যে গর্ভপাত, পরিবার নিয়ে লিখেছেন।

অ্যানি এরনক্স ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং নরম্যান্ডির ছোট শহর ইভেটোতে বেড়ে উঠেন। যখন তাকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভুষিত করা হলো তখনও তিনি ফ্রান্সেই বসবাস করছেন।

এই ফরাসি সাহিত্যিক নরম্যান্ডির সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠেন। তিনি বেশি পরিচিত ওমেন্স স্টোরি, এ মেন্স প্লেস এবং সিম্পল প্যাসনের মতো আত্মজীবনীমূলক কর্মের জন্য।

তার সাহিত্য ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৭৪ সালে। তবে আনির এসব সাহিত্যকর্মকে ইংরেজীভাষী সমালোচক ও পাবলিশাররা মাঝে মাঝে আত্মজীবনী বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আনি নিজে সব সময় বলেছেন, তার কর্মগুলো কল্পকাহিনী।

তার অনেক সাহিত্যকর্ম ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। ২০১৯ সালে দ্য ইয়ার্স নামে বইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক বুকার অ্যাওয়ার্ডের জন্য নমিনেশন পান তিনি।

১৯০১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ১১৪ বার পুরস্কারটি দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১১৯ জন এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে যথাক্রমে ১৯১৪,১৯১৮ এবং ১৯৪০,১৯৪১, ১৯৪২ ও ১৯৪৩ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়নি। এছাড়া ১৯৩৫ সালেও সাহিত্যে কাউকে নোবেল দেওয়া হয়নি।

এরআগে, ৩ অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে ২০২২ সালের নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। এ বছর চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন সুইডেনের জিনতত্ত্ববিদ সভান্তে পাবো।

এছাড়া পদার্থে ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী অ্যালাইন অ্যাসপেক্ট, মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী জন এফ ক্লজার ও অস্ট্রিয়ার পদার্থবিজ্ঞানী অ্যান্টন জেলিঙ্গার যৌথভাবে নোবেল পেয়েছেন। রসায়নে যৌথভাবে তিন নোবেল জয়ী হলেন- ক্যারোলিন আর. বের্তোজি, মর্টেন মেলডাল এবং কে. ব্যারি শার্পলেস।

নোবেল পুরস্কারের অন্যান্য শাখায় পুরস্কার একই সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির মধ্যে বিভাজিত হতে দেখা গেলেও সাহিত্যের বেলায় বিষয়টি বেশ দুর্লভ। এখন পর্যন্ত মাত্র চারবার পুরস্কারটি দুজন করে বিজয়ীর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, সবচেয়ে কমবয়সী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল জেতেন রুডিয়ার্ড কিপলিং। ১৯০৭ সালে যখন তিনি তাঁর ‘দ্য জাঙ্গল বুক’ বইয়ের জন্য নোবেল পুরস্কার জেতেন তখন তাঁর বয়স মাত্র ৪১ বছর।

সাহিত্যে নারী বিজয়ীদের সংখ্যাও বেশ কম। ১৯০৪ সালে সেলমা লাগেরলফ প্রথম নারী হিসেবে নোবেল জেতেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে গ্রাজিয়া দালেদা, সিগ্রিড আন্ডেস্ট, পার্ল বাক, গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল, নেলি সাঁচ, নাদিন গার্ডিমার, টনি মরিসন, উইস্লাওয়া সিম্বরস্কা, ডোরিস লেসিং, হের্টা মুলার, এলফ্রিডে এলিনেক, এলিস মুনরো, স্ভেৎলানা এলেক্সিয়েভিচ, ওলগা তেগারচুক এবং ২০২০ সালে লুইস গ্লুক সর্বশেষ নারী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল জেতেন।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top