মৃত্যুপুরী ইয়েমেন
জাকাত নিতে এসে পদদলিত হয়ে ৭৮ জন নিহত
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২৩, ২০:৩১
ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি স্কুলে অনুদান নিতে গিয়ে আতঙ্কে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৩২২ জন। রমজান মাসের শেষের দিকে, ঈদের আগ মুহূর্তে বুধবার এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।
হুতি নিয়ন্ত্রিত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে আলজাজিরা বলছে- ওই অনুদান বিতরণের আয়োজন করে সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, রয়টার্স জানিয়েছে, স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর দেওয়া জাকাতের টাকা বিতরণ করা হচ্ছিল ওই স্কুলে। জনপ্রতি যে অর্থ দেওয়া হচ্ছিল, তার পরিমাণ ৯ ডলারের মত। সেজন্য হাজারো মানুষ ভিড় করে ওই স্কুলে।
জাকাত বিতরণের সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন, সেই দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দিয়েছে ইয়েমেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে নিজেদের মর্জি মত অর্থ বিতরণ করার কারণে এ বিপর্যয় ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রচণ্ড ভিড় সামাল দিতে হুতি যোদ্ধারা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সেই গুলি বিদ্যুতের তারে লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। সেই শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে বিপর্যয়ের সূচনা হয়।
হুতিদের পরিচালিত আল মাসিরাহ টিভিতে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, ভিড়ের মধ্যে মানুষ একজন আরেকজনের গায়ের ওপর চড়ে জটলা থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। হুতিদের প্রকাশিত আলাদা ছবিতে ঘটনাস্থলে রক্তমাখা জুতা, স্যান্ডেল, ছেঁড়া পোশাক, ক্র্যাচ মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সালে ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিলে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ মনসুর হাদি পালিয়ে বিদেশে চলে যান। পরের বছর সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব দেশগুলোর জোট হুতি বিদ্রোহীদের দমনে অভিযান শুরু করে। তখন থেকেই যুদ্ধ আর সংঘাতে বিপর্যস্ত ইয়েমেন।
এই সংঘাতে এ পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। সেখানে অন্তত ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের ত্রাণ প্রয়োজন, যা দেশেরে মোট জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।