রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে ৫০ সাংবাদিক নিহত

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:০৯

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গত দেড় মাসে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী। সাংবাদিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা মার্কিন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) সোমবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এই তথ্য।

সিপিজে বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে এর আগে যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। সেই যুদ্ধ কভার করতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন সাংবাদিক। কিন্তু গাজায় নিহত সাংবাদিকদের সংখ্যা অনেক আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত সংবাদকর্মীদের ছাড়িয়ে গেছে। গত শনিবার গাজায় ৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, হামাস-ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে একদিনে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক নিহতের রেকর্ড যুদ্ধের প্রথম দিন ৭ অক্টোবর। ওই দিন ৬ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছিলেন। তারপর সোমবার একদিনে নিহত সাংবাদিকদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা দেখল বিশ্ব।

সিপিজের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর শরিফ মনসুর এক বিবৃতিতে বলেন, হৃদয় বিদারক এই সংঘাতের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ওই অঞ্চলের সাংবাদিকরা সর্বোচ্চ ত্যাগস্বীকার করছেন। বিশেষ করে যারা গাজায় রয়েছেন, তাদেরকে প্রতিদিন নিজের এবং পরিবারের স্বজনদের জীবন হারানোর ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে সাংবাদিক তাদের সহকর্মী, পরিবার ও মিডিয়া ফ্যাসিলিটিজ হারিয়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু কোথায় যাবেন তারা? গাজায় এই মুহূর্তে কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।

সিপিজের ওয়েবসাইটে নিহত সব সাংবাদিকের নাম ও তাদের কর্মস্থলের নাম পোস্ট করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন শরিফ মনসুর।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই উপত্যকায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এ অভিযানে যোগ দিয়েছে স্থল বাহিনীও।

অন্যদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৩ হাজার ৩০০ জনে। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন। এদিকে, ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার ফলে গাজায় তৈরি হয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। ২০ লাখেরও বেশি মানুষের এই অঞ্চলটিতে চলছে খাদ্য, পানি ও যোগাযোগ সুবিধা প্রাপ্তির জন্য তীব্র হাহাকার।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অবরুদ্ধ এলাকাটিতে যুদ্ধাপরাধসহ নানান ধরনের অপরাধের প্রবণতা আরও বাড়বে এবং সেগুলোর কোনো রেকর্ড রাখাও সম্ভব হবে না।

সেভ দ্য চিলড্রেনের মতে, গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণে প্রতিনিয়তই শিশুমৃত্যু বাড়ছে। সংস্থাটির এক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে সেখানে নিহত শিশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,১৯৫ জনে; যা ২০১৯ সালের পর থেকে বিশ্বজুড়ে বার্ষিক সংঘাতে নিহত শিশুদের মোট সংখ্যার চেয়ে বেশি।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top