রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

ভারতের নাগরিকদের এখনই রাখাইন ছাড়ার নির্দেশ

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১২:০২

ছবি: সংগৃহীত

অবিলম্বে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ত্যাগ করতে নিজের নাগরিকদের নির্দেশ দিয়েছে ভারত। দেশটিতে সেনাবাহিনী ও জাতিগত বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান ভয়াবহ যুদ্ধের প্রেক্ষিতে এই প্রথম এমন নির্দেশনা জারি করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে ওই অঞ্চল সফরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। বার্তা সংস্থা পিটিআইকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়া টুডে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জান্তা সেনাদের সঙ্গে বিরোধ, সংঘর্ষে কার্যত ভেঙে পড়েছে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এমনকি বাংলাদেশ ও ভারতে বাড়ছে অনুপ্রবেশ। প্রাণে বাঁচতে সীমান্তে ভিড় জমাচ্ছেন মিয়ানমারের নাগরিকরা।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি, টেলিযোগাযোগে বিঘ্ন, স্থল মাইন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মারাত্মক সঙ্কট সেখানে। এর প্রেক্ষিতে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ সফরে না যেতে ভারতীয় সব নাগরিকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যারা এরই মধ্যে ওই রাজ্যে অবস্থান করছেন তাদেরকে অবিলম্বে রাখাইন ত্যাগ করতে বলা হচ্ছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে মিয়ানমারের আছে ১৬৪০ কিলোমিটার সীমান্ত। এর মধ্যে আছে সক্রিয় মিলিট্যান্টদের নাগাল্যান্ড এবং মনিপুর। গত সপ্তাহে সহিংসতা পুরোপুরি বন্ধ করার আহ্বান জানায় ভারত।

এদিকে, মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর ব্যাপক লড়াই চলছে। মিয়ানমারের এই সংঘাতময় পরিস্থিতির প্রভাব বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়ও পড়েছে। তাদের ছোড়া গুলি ও মর্টারশেল সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে পড়ছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলছেন, পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে। কোনোভাবেই একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকতে দেবো না।

তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য ধারণ করে আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রীও ধৈর্য ধারণের নির্দেশনা দিয়েছেন, সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে ব্যাপকভাবে সহিংস বিক্ষোভের সাক্ষী হয়ে আসছে মিয়ানমার।

আর রাখাইন প্রদেশসহ দেশটির অন্যান্য অনেক অঞ্চলে গত বছরের অক্টোবর থেকে সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠী এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই দেখা গেছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে ভারতের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও অঞ্চলে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে মণিপুর এবং মিজোরামের নিরাপত্তা নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগও বেশ বেড়েছে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top