ইসমাইলি ইমাম প্রিন্স করিম আগা খান আর নেই

নিজারি ইসমাইলি শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতা চতুর্থ আগা খান প্রিন্স শাহ করিম আল-হুসেইনি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। দাতব্য সংস্থা আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। বিশ্বজুড়ে তিনি তার দানশীল ও মানবহিতৈষী কাজের জন্য পরিচিত। তার মৃত্যুতে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসসহ বিশ্বের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি শোক প্রকাশ করেছেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এক পোস্টে জানিয়েছে, শিয়া ইসমাইলি মুসলিমদের ৪৯তম উত্তরাধিকারী ইমাম ও চতুর্থ আগা খান প্রিন্স করিম আল-হুসাইনি মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ৮৮ বছর বয়সে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে তার পরিবারের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে ইন্তেকাল করেন।

সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা আগা খান ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক; ফ্রান্সের একটি প্রাসাদে তিনি বসবাস করতেন। ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার প্রয়াত মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন আগা খান। তিনি পাকিস্তানের করাচিতে আগা খান ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং হার্ভার্ড ও এমআইটির যৌথ উদ্যোগে আগা খান প্রোগ্রাম ফর ইসলামিক আর্কিটেকচার চালু করেন।

চতুর্থ আগা খান ছিলেন বিশ্বের অন্যতম ধনকুবের ধর্মীয় নেতা। তিনি আনুমানিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সম্পদ রেখে গেছেন। ধর্মীয় নেতা হলেও তিনি রাজা-বাদশাদের মতো জীবন যাপন করতেন। যেমন ব্যক্তিগত জেট বিমান, ২০ কোটি ডলারের সুপার-ইয়ট এবং এমনকি বাহামাসে একটি ব্যক্তিগত দ্বীপও ছিল তার।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে গেছেন। তার নেতৃত্বে আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক বিশ্বব্যাপী অসংখ্য উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা লক্ষাধিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে।

একসঙ্গে চার দেশ তথা ব্রিটেন, ফ্রান্স, সুইডেন ও পর্তুগালের নাগরিকত্ব ছিল এই ধর্মীয় নেতার। বিশ্বজুড়ে উন্নয়নমূলক কাজের জন্যও পরিচিতি ছিল তার।

বাংলাদেশেও তার অবদান স্মরণীয়, বিশেষত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে তার সংস্থার কাজ প্রশংসিত হয়েছে।