মোদিকে সম্মান করি, কিন্তু ভারতকে এত টাকা কেন দেব: ট্রাম্প
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৬:২৮

ভারতের জন্য বরাদ্দ নির্বাচনী অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতে ভোটারদের বুথমুখী করতে ১৮২ কোটি রুপি (২ কোটি ১০ লাখ ডলার) অনুদান দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেই অনুদান বাতিল করে দেওয়া হলো। এলন মাস্কের নেতৃত্বে গঠিত ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE) সম্প্রতি ভারতে এই সহায়তা বাতিল করেছে৷ ট্রাম্পের মতে, ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার পাশাপাশি শুল্ক হারও এত বেশি যে, এই ধরনের সহায়তার প্রয়োজন ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কেন ভারতকে এত টাকা দিতে যাব? ওরা তো আমাদের থেকে অনেক টাকা কর নেয়!’’
ট্রাম্প বলেন, “ভারতের তো প্রচুর টাকা আছে, তারা পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ কর আদায়কারী দেশ। তাদের দেশে আমাদের প্রবেশ করাও কঠিন, কারণ শুল্ক অনেক বেশি। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা রাখি, কিন্তু ভোটার টার্নআউট বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কি যুক্তি আছে?”
তার প্রশ্ন, কেন ভারতকে এত টাকা আমরা দিতে যাব? ওরা তো আমাদের থেকে অনেক টাকা কর নেয়! ওদের করের পরিমাণ এত বেশি বলে আমরা সেভাবে বাণিজ্য করতে পারি না।
এর পরেই মোদির কথা উল্লেখ করেন ট্রাম্প। বলেন, ভারত এবং তাদের প্রধানমন্ত্রীকে আমি যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাই বলে ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২ কোটি ১০ লাখ ডলার? অনুদান বাতিলের নথিতে স্বাক্ষরের পর এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
আমেরিকার এই অনুদানকে ‘ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বহিরাগতের হস্তক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছে। এর দায় পূর্বতন কংগ্রেস সরকারের উপরে চাপিয়েছে তারা।
ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE) রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিদেশি সাহায্য তহবিলের ৭২৩ মিলিয়ন ডলার কাটছে। এর মধ্যে ভারতের জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট শক্তিশালী করার জন্য ২৯ মিলিয়ন ডলারসহ একাধিক প্রকল্পের তহবিল অন্তর্ভুক্ত ছিল। DOGE জানায়, এই পদক্ষেপ সরকারের বাজেট খরচ কমানোর অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ভারতীয় অর্থনীতিবিদ সঞ্জীব সান্যালও তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি টুইট করেন, “২১ মিলিয়ন ডলার ভারতের ভোটার টার্নআউট বাড়ানোর জন্য কোথায় খরচ হয়েছে, তা জানার আগ্রহ আছে। ২৯ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে এবং ২৯ মিলিয়ন ডলার নেপালে কোথায় খরচ হয়েছে, সেটাও জানতে চাই।” তিনি USAID-কে “মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতারণা” বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এছাড়া, ভারতের প্রাক্তন চিফ ইলেকশন কমিশনার এস.ওয়াই. কুরাইশি এই বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং বলেন, ২০১২ সালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো MoU ছিল না, যার মাধ্যমে ইউএস এজেন্সি ভারতের ভোটার টার্নআউট বাড়ানোর জন্য সহায়তা করবে।
বিজেপি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, এবং বলেছে, “ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাইরের হস্তক্ষেপ কাদের স্বার্থে কাজ করছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।