মাদাগাস্কারে বিক্ষোভে ২২ জন নিহত, সরকার ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৬

বিদ্যুৎ ও পানি সংকট নিয়ে টানা বিক্ষোভে রক্তক্ষয়ী সহিংসতার পর মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা তার সরকার ভেঙে দিয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এ ঘটনায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এই আন্দোলন সোমবারও অব্যাহত থাকে। রাজধানী আন্তানানারিভোতে তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা ঘন ঘন লোডশেডিং, পানির সংকট ও জীবনযাত্রার অবনতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে। স্থানীয় টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গাইতে শহরের কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সকাল-সন্ধ্যা কারফিউ জারি করেছে। ইতিমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন সুপারমার্কেট, ইলেকট্রনিকস দোকান ও ব্যাংকে লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে। কয়েকজন রাজনীতিবিদের বাড়িতেও হামলা হয়েছে।
টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা বলেন, “সরকার যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে থাকে তবে আমরা ক্ষমা চাইছি। আমি জনরোষ বুঝতে পারছি এবং বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যায় মানুষের ভোগান্তি উপলব্ধি করছি।”
তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং তরুণ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের দাবি, হতাহতের মধ্যে শুধু বিক্ষোভকারীই নন, সাধারণ মানুষও রয়েছেন। কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে, আবার কেউ লুটপাট ও গ্যাং সহিংসতায় নিহত হয়েছেন। তবে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব তথ্যকে ‘গুজব ও ভ্রান্তি’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২০২৩ সালের পুনর্নির্বাচনের পর এটিই প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। প্রায় তিন কোটি মানুষের দেশ মাদাগাস্কার আফ্রিকার অন্যতম দরিদ্র রাষ্ট্র। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২ সালে দেশটির প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছিলেন।
বিক্ষোভগুলো সংগঠিত হয়েছে মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তারা কেনিয়া, নেপাল ও মরক্কোর সাম্প্রতিক তরুণ আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত। আন্তানানারিভোর রাস্তায় এমনকি নেপালের পতাকাও দেখা গেছে, যা চলতি মাসে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে ভূমিকা রাখা বিক্ষোভে ব্যবহৃত হয়েছিল।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।