করোনায় লোকসানের শঙ্কায় খামারিরা

পাবনার ঈশ্বরদী থেকে | প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০২১, ০৫:২৫

করোনায় লোকসানের শঙ্কায় খামারিরা

পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে লালন–পালন করা কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলার খামারিরা। বছরজুড়ে পরিশ্রম ও বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করার পর এখন পশুর বাজার ও দাম নিয়ে উদ্বেগে দিন কাটছে তাঁদের।

প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় ৩৯৩ জন খামারি মূলত কোরবানির বাজারকে কেন্দ্র করে গবাদিপশু লালনপালন করেছেন। এবার ঈদুল আজহায় গরু (ষাঁড়, বলদ ও গাভী) ১২ হাজার ৬৪০, ছাগল ১০ হাজার ৭৬৪, ভেড়া ১ হাজার ৪৩৩, মহিষ ২৬৩ ও অন্যান্য ১৯০টি পশু উঠতে পারে। এ ছাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের ঘরে রয়েছে কয়েক হাজার গরু-ছাগল। এসব পশু প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষুদ্র খামারিরাও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার চাহিদার তুলনায় উপজেলায় পশুর সংখ্যা অনেক বেশি। পশুর জোগান বেশি থাকায় ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে উদ্বেগে আছেন খামারিরা। করোনাভাইরাস ও লকডাউনে হাটে ক্রেতা সমাগম কেমন হবে, তা নিয়েও শঙ্কায় আছেন বড় খামারিসহ প্রান্তিক কৃষকেরা। তাঁরা বলছেন, সারা বছর এত কষ্ট করে পশু লালন–পালন করে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে না পারা হবে দুর্ভাগ্যজনক।

উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক লাল মিয়া বলেন, ‘আমার তিনটি গরু আছে। কোরবানি ঈদে বিক্রি করব বলে প্রস্তুত করেছি। কিন্তু ন্যায্য দামে পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’ সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি গ্রামের খামারি নাজমুস সাকিব বলেন, ‘কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য তাঁর খামারে ২৭টি গরু প্রস্তুত আছে। ইতিমধ্যে দুটি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। বাকিগুলোর ছবিসহ অনলাইন দেওয়া আছে। সেই অনুযায়ী ক্রেতারও সাড়া পাচ্ছেন না।’

উপজেলা সদরের অনণকোলা মুনতাহার ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী বাচ্চু ইসলাম বলেন, তার ফার্মে ৮০টি গরু আছে। তার মধ্যে ১২টি বিক্রির জন্য মোটাতাজা করেছেন। প্রতিটি গরুর পেছনে তার প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। বাজার ভালমতো জমলে একেকটি গরু ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন তিনি।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদীতে পশু খামারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গবাদিপশু সুস্থ রাখতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের কার্যক্রম একদিনের জন্যও থেমে থাকেনি।

অরনকোলা পশুহাটের ইজারা কমিটির পরিচালক মিজানুর রহমান রুনু মন্ডল বলেন, হাট কমিটির পক্ষ থেকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরদীতে কোরবানি পশু সংকট হবে না। সরকারি নির্দেশনা মেনে স্থানীয়ভাবে আমরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী হাটে পশু বিক্রির ব্যবস্থা করেছি।

এ বিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনার জন্য হাট কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১



বিষয়: পাবনা


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top