লোডশেডিংয়ে তাঁতশিল্পের উৎপাদন বিপর্যস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২১ আগষ্ট ২০২২, ০৪:৫৫
তাঁতের শাড়ি-লুঙ্গিসহ নানা পোশাক তৈরিতে একটি সমৃদ্ধ জেলা হিসেবেই পরিচিতি সিরাজগঞ্জ। এখানকার উৎপাদিত তাঁত পণ্য ভারত, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। গত দুই বছর করোনা মহামারি ও বন্যার কারণে এই শিল্পে ধস নেমে আসে। ফলে এই অঞ্চলের তাঁত কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হন।
এখন পর্যাপ্ত কাপড় তৈরি করতে পারলে এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব ছিল। তবে সম্প্রতি চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেয়ে অধিকাংশ তাঁত কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জেলার তাঁতশিল্পের উৎপাদন কমে অর্ধেকে নেমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলায় সরজমিনে দেখা যায়, লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানা মালিকরা ডিজেলচালিত জেনারেটরের সাহায্যে তাঁত কারখানা সচল রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ডিজেলের দামবৃদ্ধি পাওয়ায় কারখানা সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। লোডশেডিংয়ের ফলে থ্রি-পিস, লুঙ্গি, শাড়ি ও গামছা তৈরিতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আবার যেসব কারখানায় জেনারেটর নেই সেসব কারখানার শ্রমিকরা কখন বিদ্যুৎ আসবে সেই ভরসায় অলস বসে আছেন।
জেলা তাঁত বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের ৯ উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার তাঁত রয়েছে। আর এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মালিক ও শ্রমিক মিলে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ জড়িত।
বাংলাদেশ পাওয়ালুম অ্যান্ড হ্যান্ডলুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদিউজ্জামান বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে অধিকাংশ তাঁত কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। আগে বিদ্যুৎ না থাকলে আমরা জেনারেটরের সাহায্যে কারখানা চালু রাখতাম। এখন আর সে উপায়ও নেই। কারণ তেলের দামও বেড়েছে। তাই আমরা বাধ্য হয়েই এখন বিদ্যুৎ চলে গেলে কারখানা বন্ধ রাখছি। আর কারখানা বন্ধ থাকলে শ্রমিকেরাও কাজ করতে পারছেন না। আর যতটুকু কাপড় তৈরি করা হচ্ছে, তাও ন্যায্য দামে বিক্রি করা যাচ্ছে না। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে মালিকদের।
তিনি আরও বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে লাখো শ্রমিক বেকার হয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ পরিবারের তাগিদে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে কারখানা চালানো যাচ্ছে না। তাঁত মালিকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
তাই এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এনএফ৭১/আরআর/২০২২
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।