দেশে যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫:৫০
যারা প্রাণপ্রকৃতি ভালোবেসে শান্তি পান। শহুরে জীবনের কোলাহল থেকে স্বস্তিদায়ক গন্তব্য চান। তাদের পদভারে মুখরিত এখন কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ভ্রমণপিপাসুদের আনন্দ-উন্মাদনায় পুরো সৈকত জুড়ে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রকৃতি যেন দুহাত মেলে তার রূপ-সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে সৈকতজুড়ে। কুয়াকাটা এমন রূপ-রস-সৌন্দর্য বিলাচ্ছে বছরের পর বছর। তাই বলা যায়, প্রকৃতি যে কতটা উদার কুয়াকাটা না ঘুরলে বোঝা সম্ভব নয়।
একইস্থানে দেখা মিলবে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তঃ
এটিই দেশের একমাত্র নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। সাগরের বুক চিরে সকালেই দিনের তেজি সূর্যটা আলো ছড়াতে শুরু করে। আবার সন্ধ্যায় সাগরের কোলে আশ্রয় নেয় লাল থালার মত হলুদাভ সূর্য। দিনের আলোয় কখনও লাল, কখনও সোনালি রঙ সাগরের জলে ভর করে। নীল আকাশের রঙেও রাঙিয়ে তোলে কখনও কখনও। আর দক্ষিণের মৃদু বাতাস মন ও শরীর দুলিয়ে যায় ক্ষণে ক্ষণে। শান্ত সমুদ্রে স্নান আর মিষ্টি রোদে পর্যটকদের ক্লান্তিহীন ছুটোছুটি চলে অবিরাম। নির্জন এই সমুদ্র সৈকতে প্রকৃতির কলতানে হারিয়ে যেতে তাই কোনও বাঁধা নেই।
কুয়াকাটার কুয়ারে রহস্য উন্মোচনঃ
কুয়াকাটা যাবেন আর কূপ দেখবেন না তা কী হয়! কুয়াকাটা নামকরণের পেছনে থাকা ঐতিহাসিক কুয়াটি আজও টিকে আছে। সেটি দেখতে যেতে হবে রাখাইনদের বাসস্থল কেরাণিপাড়ায়। বৌদ্ধ বিহারে প্রবেশের মুখে কুয়াটির অবস্থান। অনেকেরই অজানা কুয়াকাটা নামটি এল কীভাবে। আসলে কুয়াকাটা নামের পেছনে আছে এক রহস্য। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এদেশে আরাকানদের আগমনের ইতিহাস। প্রচলিত আছে, এখানে সমুদ্র উপকূলে মিষ্টি পানির সন্ধান পাওয়া গেলেও দূর্ভোগ ছিল ভীষণ। এখানে কুয়া কাটা হত ঠিকই, কিন্তু বালি দিয়ে তৈরি বাঁধ ভেঙ্গে যেত। তাই রাখাইনরা নিজেদের দূষতো ভাগ্য বঞ্চিত হিসাবে। রাখাইন ভাষায় যার অর্থ দাঁড়ায় ক্যাওয়েছাই। এভাবেই কুয়া কাটতে কাটতে এই উপকূল অঞ্চলের নাম হয়ে ওঠে ক্যাছাইও, যার বাংলা অর্থ কুয়াকাটা।
ক্ষুধা নিবারেণে ভোজন সন্ধানেঃ
ভ্রমণ শেষে ক্লান্ত শরীর আর ক্ষুধা নিয়ে পেট পুরে খেতে ইচ্ছে করেনা এমন মানুষের জুড়ি মেলা ভার। সৈকতের হোটেলগুলোর খাবার রীতিমতন মুগ্ধকর, দামও সাধ্যের মধ্যে। ভোজন রসিকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকে সৈকতের ছোটবড় ফুডকোর্ট। এখানে বসে সাচ্ছন্দ্যে ক্ষুধা নিবারন করেন দুর—দুরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। রকমারী মাছ, ডিমভর্তা ভাজি মিলে যেন একবারে নিজের ঘরের রান্না। আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু মানুষ হন তাহলে কুয়াকাটা সৌন্দর্য আপনাকে অবশ্যই টানবে এবং মুগ্ধ করবে। শহর ছেড়ে দুদণ্ড শান্তির জন্য তাই দেরি না করে ঘুরে আসতে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।