রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যান ও আইনশৃঙ্খলার অবস্থা উদ্বেগজনক
রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম: | প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৩২
গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চট্টগ্রামের উত্তরাঞ্চলের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। রাউজানে ১৭ জন এবং রাঙ্গুনিয়ায় ১৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল কারণ হিসেবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিরোধকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, অনেক হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। শুধু রাউজানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৩৫০ এর বেশি মানুষ। তবে মামলার পরিমাণ অর্ধশতাধিক হলেও গ্রেপ্তারের সংখ্যা কম।
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা (রাউজান):
-
২৮ আগস্ট: আব্দুল মান্নান পিটিয়ে হত্যা
-
১ সেপ্টেম্বর: মো. ইউসুফ মিয়া
-
২৯ অক্টোবর: আজম খান
-
১১ নভেম্বর: আবু তাহের
-
চলতি বছর ২৪ জানুয়ারি: ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম গুলি করে হত্যা
-
১৯ ফেব্রুয়ারি: মুহাম্মদ হাসান পিটিয়ে হত্যা
-
১৫ মার্চ: কমরউদ্দিন জিতু ছুরিকাঘাতে নিহত
-
৬ জুলাই: মো. সেলিম উদ্দিনকে স্ত্রী-কন্যার সামনে গুলি করে হত্যা
-
৭ অক্টোবর: আবদুল হাকিম ব্যবসায়ীকে মোটরসাইকেলযোগে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা
রাউজান থানার পুলিশ জানাচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও মাটি-বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বেড়েছে।
রাঙ্গুনিয়ায় হত্যাকাণ্ডের পরিস্থিতি:
রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে হত্যাকাণ্ডের পেছনে আধিপত্য বিস্তার, মাদক, জমি-বিতণ্ডা ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব প্রধান কারণ।
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা (রাঙ্গুনিয়া):
-
১৫ জানুয়ারি: জরিনা বেগম (২৪) গৃহবধূ নিহত, স্বামী গ্রেপ্তার
-
২৫ মার্চ: নুরুল ইসলাম তালুকদার (৭০) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা
-
১০ এপ্রিল: আওয়াইমং মারমা (৩৩) গুলিতে নিহত
-
২০ জুন: শিবুই মারমা গুলিতে হত্যা
-
১০ জুলাই: মোহাম্মদ রাসেল (৩৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
-
২৭ আগস্ট: রুবেল (৩৫) গুলি ও কুপিয়ে হত্যা
-
১৯ সেপ্টেম্বর: রুমা আক্তার (২৬) গৃহবধূ হত্যার শিকার
-
২৩ সেপ্টেম্বর: মো. খোরশেদ আলম (২৮) গলা কেটে হত্যা
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম ও রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি এটিএম শিফাতুল মাজদার জানিয়েছেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে। তিনি জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, তারা পুলিশের সহায়তায় এগিয়ে আসুন, যাতে সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের কোনো ছাড় না দেওয়া যায়।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।