পাবনায়
মাচা পদ্ধতিতে টমেটা চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা
পাবনা থেকে | প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২১, ০৫:২৪
পাবনায় পরিবেশ বান্ধব ও নিরাপদ মাচা পদ্ধতিতে টমেটা চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সবজি নষ্ট না হওয়ায় বাড়ছে উৎপাদনও। মাচায় বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করে কৃষকেরা আগের চেয়ে এখন বেশি লাভবান হচ্ছেন। ফলে মাচা পদ্ধতিতে পটল, টমেটো, লাউ, সিম, মিষ্টি কুমড়া, করলা, ধুন্দল, চালকুমড়া, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, শসা, বরবটিসহ লতা জাতীয় অন্যান্য সবজি চাষ বাড়ছে।
পাবনা চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে মাচা পদ্ধতিতে টমেটা চাষি আবুল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিন বন্ধু মিলে ছয় বিঘা জমিতে সবজির খামার করেছেন তারা।
খামারে মাচায় টমেটা পটল, লাউ, করলা, ধুন্দল চাষ করছেন। বাঁশের খুটি জিআই তার টানিয়ে তার উপর পাটকাঠি, নাইলন সুতা, পাতলা জিআই তার বিছিয়ে মাচা তৈরী করেছেন। সোয়া দুই বিঘা জমিতে মাচায় টমেটা চাষে ইতিমধ্যে তাদের প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিজলী-১১ জাতের টমেটা চাষ করেছেন তারা। ইতিমধ্যে টমেটা পাকতে শুরু করেছে। টমেটার বাজার দাম ভাল থাকলে প্রায় এক লাখ টাকা লাভ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও জানান, মাচায় চাষ করলে পচনের হাত থেকে সবজি রক্ষা পায়। ফলে ফলন প্রায় দ্বিগুন হয়। পোকা মাকরের হাত থেকে সবজি রক্ষা পায়। সেচ ও কিটনাশক প্রয়োগেও সুবিধা হয় বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহর উপজেলায় ১ হাজার ৮শ ৪৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২শ হেক্টর জমিতে শিম, ২শ ৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন, ১শ ৯৫ হেক্টর জমিতে মূলা, ১শ ৬০ হেক্টর জমিতে ফুল কপি, ১শ ৪৫ হেক্টর জমিতে লাউ, ১শ ১৫ হেক্টর জমিতে পালং শাক, ৯০ হেক্টর জমিতে বাধাকপিসহ অন্যান্য সবজি আবাদ হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, কৃষকেরা এখন অনেক সচেতন। অনেক কৃষক টমেটাসহ লতানো সবজি মাচায় চাষ করতে শুরু করেছেন। মাচায় সবজি চাষে প্রারম্ভিক খরচ বেশি হলেও এটি লাভজনক। পটল, টমেটা, লাউ, সিম, মিষ্টি কুমড়া, করলা, ধুন্দলসহ লাতানো জাতীয় সবজি মাচায় চাষ করা যায়। এর জন্য উঁচু জমি বেছে নেওয়া ভাল। উঁচু করে মাচা তৈরী করলে মচার সবজি মাটির সংস্পর্শে আসে না। পোকা মাকড়, ছত্রাকের আক্রমন কম হয়।
টমেটা, মিষ্টি কুমড়া জাতীয় ফসল মাটির সংস্পর্শে থাকলে একদিকে যেমন পঁচনের ভয় থাকে তেমনি অন্য দিকে মাটির পাশটায় ঠিকমত পাকে না। মাচায় সবজি চাষের অন্য সুবিধা গুলো হলো সবজিতে ভিটামিন বা সীমিত আকারে কীটনাশক প্রয়োগের সময় তা নষ্ট হয় না। গাছের গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করা সহজ হয়। পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় এ পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি পাওয়া যায়।
এনএফ৭১/জেএস/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।