প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর নিতে

চাঁদা দাবির অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

পাবনা থেকে | প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ২৩:০২

পাবনায় ভূমিহীন জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর নিতে চাঁদা দাবির অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া ঘর দিতে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের এক ইউনিয়ন নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আবু দাউদ নান্নু সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

চাঁদার টাকা না দিলে বরাদ্দকৃত ঘরের চাবি কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মমতাজ বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মুজিবশতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে করমজা ইউনিয়নে সরকারি খাঁস জমিতে পাশাপাশি দু’টি স্থানে গৃহহীনদের জন্য প্রায় ৫০টি ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। এই ঘরের একটি ঘর বরাদ্দ পান সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের হতদরিদ্র মমতাজ বেগম। লটারির মাধ্যমে ঘর পাওয়ায় নির্ধারিত মল্লিকপাড়া প্রকল্পের পাঁচ নম্বর বাড়ির চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে মমতাজকে।

কিন্তু করমজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ নান্নু ওই ঘর বাবদ তার কাছে ৫৫ হাজার টাকা দাবি করেছেন। এরই মধ্যে নান্নুর স্ত্রী ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছেন। বাকি ৫০ হাজার টাকা না দিলে তার ঘরের চাবি কেড়ে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয় । নিরুপায় হয়ে দরিদ্র মমতাজ বেগম গত ১১ এপ্রিল সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন।

ভুক্তভোগী মমতাজ বেগম ও তার স্বামী ফজর বলেন, অন্যের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছি। প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছেন। সেই ঘর লটারির মাধ্যমে আমা পেয়েছি। ঘরের চাবিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘরে ওঠার আগে আমার কাছে টাকা চাইছে নেতা। কিছু টাকা দিয়েছি আর বাকি টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। উপায়ন্তর না পায়ে অভিযোগ করেছি। নতুন ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ এখনো বসানে হয়নি। তাই ঘরের উঠতে পারছিনা।

অভিযোগ অস্বীকার করে আবু দাউদ নান্নু বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। কখনো কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করিনি। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও দলীয় কাউন্সিল। আমার প্রতিপক্ষ আমাকে ঘায়েল করার জন্য ওই গৃহহীন নারীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল আহম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের কিছুটা সত্যতা পাওয়া গেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি বলেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কাজ কেউ করলে সে যত বড়ই নেতা হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাঁথিয়ার বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণ হলে, ওই নেতার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১



বিষয়: পাবনা


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top