ফোন করলেই হাজির ‘চুলকাঠি অক্সিজেন ব্যাংকের সদস্যরা

বাগেরহাট থেকে | প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২১, ০৪:৩৪

ফোন করলেই হাজির ‘চুলকাঠি অক্সিজেন ব্যাংকের সদস্যরা

 

যখন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটে রোগী মারা যাচ্ছে। ঠিক সেই সময় বাগেরহাটের চুলকাঠি বাজারের কতিপয় মহাপ্রাণ মানুষের সংগঠন ফোন পেলেই বিনামূল্যে বাড়ি বাড়ি অক্সিজেন পৌঁছে দিচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির নাম ‘চুলকাঠি অক্সিজেন ব্যাংক’।

পহেলা মে শুরু করা এই সংগঠনটি অন্তত ১১ জন মুমূর্ষু রোগীকে অক্সিজেন দিয়েছেন। চরম অক্সিজেন সংকটের সময় কয়েকজন যুবকদের এই উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্ব মহলে। বিনা অক্সিজেনে, ঝড়ে পড়বে না কোনো প্রাণ- এই স্লোগান নিয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাঠি এলাকার আট জন যুবক পহেলা মে ‘চুলকাঠি অক্সিজেন ব্যাংক’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গঠন করেন।

এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে তারা নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা চালায়। একপর্যায়ে তাদের এই মহতি উদ্যোগের বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। নির্ধারিত নাম্বারে ফোন বা অক্সিজেন ব্যাংকের ফেসবুক পেজে সহযোগিতা চাইলে সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকরা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে হাজির হন রোগীর বাড়ি।

শুধু বাগেরহাট জেলা নয়, পার্শ্ববর্তী খুলনার রূপসাতেও অক্সিজেন সরবরাহ করেছেন এই স্বেচ্ছাসেবকরা। অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে সংগঠনটির সাকিব হাসান জনি, কাজী রেজোয়ান, চয়ন দেবনাথ করোনা আক্রান্তও হয়েছেন। তবে তারা এখন সুস্থ রয়েছেন।

এ পর্যন্ত মোরেলগঞ্জ, বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, খুলনার রূপসাসহ বিভিন্ন উপজেলায় ১১ জন মুমূর্ষু রোগীকে অক্সিজেন দিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়াও চারজন রোগীর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ফিরে এসেছেন তারা। গভীর রাতেও অক্সিজেন নিয়ে রোগীর বাড়িতে যান স্বেচ্ছাসেবকরা। ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে বিনামূল্যে অক্সিজেন পেয়ে খুশি রোগীরা।

চুলকাঠি অক্সিজেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা স্বেচ্ছাসেবক জনি, আর রেজোয়ান বলেন, পহেলা মে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে অক্সিজেন ব্যাংক চালু করি। এরপর থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি মুমূর্ষু রোগীর অক্সিজেনের অভাব মেটাতে। গভীর রাতেও মানুষের বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছি আমরা।

এর মধ্যে একদিন রাত ১১টার সময় পার্শ্ববর্তী ভট্টবালিয়াঘাটা এলাকা থেকে ফোন করেন মহসীন মোড়ল নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী খুব অসুস্থ অক্সিজেন লাগবে। ফোন পেয়ে অক্সিজেন নিয়ে ছুটে যাই আমরা। অক্সিজেন দেওয়া শুরু করি। পরবর্তী আমাদের অক্সিজেন দেওয়া অবস্থায় বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ বখশির পরামর্শে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১



বিষয়: বাগেরহাট


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top