গ্ল্যামারের আড়ালে যন্ত্রণার গল্প তুলে ধরলেন মাহিমা
বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৩
নব্বইয়ের দশকের শেষ প্রান্তে যিনি এক ঝলকেই কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন রুপালি পর্দা, সেই মাহিমা চৌধুরীর জীবনের গল্প যে এতটা আঁধারে মোড়া—তা খুব কম মানুষই জানেন। অভিষেকের সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই লাইমলাইট থেকে হারিয়ে যাওয়া, একের পর এক ছবি থেকে বাদ পড়া এবং ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনা—সব মিলিয়ে জীবনের কঠিন সময়ের কথা বহু বছর পর অকপটে তুলে ধরলেন বলিউড অভিনেত্রী।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সাংবাদিক সিদ্ধার্থ কানানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহিমা চৌধুরী জানান, চুক্তি সংক্রান্ত বিভ্রান্তির কারণে তাকে ভয়াবহ পেশাগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
মাহিমা বলেন, “অনেক কিছুই হয়েছে। আমার প্রথম সিনেমার পর আমাকে কোর্টে নেওয়া হয়েছিল। অনেক সিনেমা থেকে আমাকে বের করে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, আমি নাকি মুক্তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ—যা একেবারেই সত্যি ছিল না। এরপরই আমি দুর্ঘটনার কবলে পড়ি। প্রায় এক বছর বাড়িতে বসেই থাকতে হয়েছিল।”
দীর্ঘ বিরতির পর কাজে ফিরলেও পরিস্থিতি সহজ ছিল না। তখন তাকে ছোট চরিত্র কিংবা বিশেষ গানের দৃশ্যে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হতে থাকে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি ছোট ছোট চরিত্রে কাজ শুরু করি, আর সেগুলো হিট হয়ে যেত। এমনকি শুধু একটি গানের দৃশ্যেও অভিনয় করতাম। তখন আমাকে ‘লাকি ম্যাসকট’ বলা হতো। কিন্তু আমি আরও অনেক কিছু করতে চেয়েছিলাম।”
‘দিল কেয়া করে’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন মাহিমা চৌধুরী এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় তার মুখে মারাত্মক আঘাত লাগে।
সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমার মুখে ৬৭টি ছোট কাচের টুকরো ঢুকে গিয়েছিল। মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে সেগুলো বের করতে হয়েছিল। দুর্ঘটনার পরদিন মুখ আরও ফুলে যায়, বিকৃত দেখাচ্ছিল। বন্ধুরা পর্যন্ত ভেবেছিল আমি কারও সঙ্গে ঝগড়া করেছি। তখন বুঝতেই পারছিলাম না জীবনে কী করব।”
এর আগে ২০২০ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহিমা আরও জানান, দুর্ঘটনার পর দীর্ঘদিন তাকে অন্ধকার ঘরে থাকতে হয়েছিল। সূর্যের আলো ও অতিবেগুনি রশ্মি এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয় চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে। মুখে সেলাই ও স্ট্যাপল নিয়ে দিনের পর দিন কেটেছে ঘরের ভেতরেই।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘পরদেশ’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে মাহিমা চৌধুরীর। এতে শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয় করে রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর ‘দাগ: দ্য ফায়ার’, ‘পেয়া কই খেল নেহি’, ‘দিওয়ানে’, ‘কুরুক্ষেত্র’সহ একাধিক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেন।
চলতি বছরে মাহিমা অভিনীত দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে—১৭ জানুয়ারি ‘ইমার্জেন্সি’ এবং ৭ মার্চ ‘নাদানিয়া’। বর্তমানে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন ‘দুর্লভ প্রসাদ কি দুসরি শাদি’ সিনেমার কাজে। রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার এই সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সঞ্জয় মিশ্রা, আর ববিতা চরিত্রে দেখা যাবে মাহিমা চৌধুরীকে। সিনেমাটি আগামী ১৯ ডিসেম্বর মুক্তির কথা রয়েছে।
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।