গত ফ্যাসিস্ট সরকার ১৫ বছরে রাজনীতিবিদসহ অনেকের নামে অসংখ্য রাজনৈতিক মামলা দিয়েছিল। এসব মামলায় যারা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী ছিলেন তারা হলেন- বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা তেমনই একটি মামলা। যে মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবশেষে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সকালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল রোববার হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের শুনানির দিন আজ ধার্য করেন আদালত।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট ঢাকার তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি করে দুদক। এতে ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ করা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর ওই মামলায় রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। রায়ে খালেদা জিয়াসহ তিন আসামিকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়।
২০২৪ সালে ৫ আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই মামলায় গত ২৭ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে খালাস দেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় ওই রায়ের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আপিল দায়ের করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ।
খালেদা জিয়ার মামলার তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক-এগারো পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি মামলা হয় ২০১৫ সালে। ২০১৩, ১৪, ১৬ সালে আরও বেশ কয়েকটি মামলা হয়। ঢাকাসহ কুমিল্লা, খুলনা, নড়াইল ও পঞ্চগড়ে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা এসব মামলা করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতির এ চারটি মামলা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা হয়। অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে কুমিল্লায় তিন মামলা, ঋণখেলাপির অভিযোগে মামলা, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা, গুলশানে বোমা হামলার অভিযোগে মামলা, ২০১৪-১৫ সালে হত্যার অভিযোগে মামলা, রাজধানীর দারুস সালাম থানায় নাশকতার ৮ মামলা, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ৩ মামলা, ঢাকার বাইরে মানহানির মামলা, খুলনায় অগ্নিসংযোগের মামলা, পঞ্চগড়ে নাশকতার মামলা করা হয়।
দলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীর প্রত্যাশা শিগগিরই রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা থেকে পুরো মুক্তি পাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, মামলামুক্ত হতে খালেদা জিয়াকে আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।