১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৪
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে কথিত ‘আয়নাঘরে’ গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১২ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশের দিন ধার্য রয়েছে আজ।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে। আদেশের পরই অভিযোগ গঠন করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য এর আগে ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য থাকলেও সেদিন কোনো আদেশ না দিয়ে আজকের দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। যদিও ওই দিন মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামিকে পুলিশ প্রহরায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামি হলেন , ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
মামলার পলাতক ১০ আসামির মধ্যে পাঁচজন বিভিন্ন সময়ে ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা হলেন—
-
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন
-
মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন
-
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম
-
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী
-
মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক
অন্য পলাতক আসামিরা হলেন—
-
শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক
-
ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল উল ইসলাম
-
মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ
-
লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক
গত ৭ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জেআইসি সেলে সরকারবিরোধী মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের তুলে নেওয়া, গুম ও নির্যাতনের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ২৬ জনের ঘটনার তথ্য উপস্থাপন করেন।
এসব ঘটনার ভিত্তিতে পাঁচটি অভিযোগ এনে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন প্রসিকিউশন। শুনানি শেষে স্টেট ডিফেন্স এবং গ্রেপ্তার তিন আসামির পক্ষে সময় চাইলে ট্রাইব্যুনাল আজকের দিন ধার্য করেন।
এর আগে, ২৩ নভেম্বর পলাতক আসামিদের জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। স্বেচ্ছায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে নিয়োগ দেওয়া হলেও শারীরিক কারণে ৩ ডিসেম্বর তিনি সরে দাঁড়ান। পরে শেখ হাসিনার পক্ষে মো. আমির হোসেনকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ২২ অক্টোবর গ্রেপ্তার তিন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি পলাতক আসামিদের হাজির করতে সাত দিনের মধ্যে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।