অতিরিক্ত গ্যাসের ওষুধ খেলে কি হয়?
রাশেদ রাসেল | প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩৯
সামান্য গ্যাস হলেই গ্যাসের ওষুধ খাচ্ছেন? তাহলে সতর্ক হয়ে যান এখনই। কারণ, গ্যাসের ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত খেলে দেখা দেয় নানা রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
অনেকেই অল্প একটু ঢেকুর, বমি ভাব, বদহজম বা গ্যাস হলেই কথায় কথায় সারা বছরই গ্যাসের ওষুধ খেয়ে থাকেন। যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ঠিক নয়। যার ফলে শরীরে অনেক ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত গ্যাসের ওষুধ খেলে কি হয় চলুন জেনে নেওয়া যাক:
ফোলাভাব ও পেটে অস্বস্তি:
গ্যাসের ওষুধ পাচনতন্ত্রের গ্যাসের বুদবুদ ভেঙে ফেলতে সহায়তা করে। এই ওষুধগুলোর অত্যধিক গ্রহণ অন্ত্রে গ্যাসের প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে। যার ফলে পেটে ফোলাভাব এবং অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
ডায়রিয়া:
কিছু অ্যান্টি-গ্যাস ওষুধে সিমেথিকোন বা অ্যাক্টিভেটেড চারকোলের মতো উপাদান থাকে, যার হালকা বিরূপ প্রভাব থাকতে পারে। এই ওষুধগুলো বেশি পরিমাণে গ্রহণের ফলে ডায়রিয়া হতে পারে। কারণ তারা পাচনতন্ত্রের মাধ্যমে মল চলাচলকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য:
কিছু গ্যাস-বিরোধী ওষুধ, বিশেষ করে বিসমাথ সাবসালিসিলেটযুক্ত কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রভাব ফেলতে পারে। এই ওষুধগুলোর অত্যধিক গ্রহণের ফলে সাধারণ মল ত্যাগে বাঁধা দিতে পারে যা কোষ্ঠকাঠিন্য অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে।
ইলেক্ট্রোলাইট কমে ভারসাম্যহীনতা:
গ্যাসের ওষুধ দীর্ঘ সময় ধরে বেশি ব্যবহারের কারণে বা অত্যধিক ডায়রিয়ার ফলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট কমে গিয়ে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে শরীর থেকে বেশি তরল নির্গত হলে এটি দুর্বলতা, মাথা ঘোরা এবং হৃদযন্ত্রের স্পন্দন অনিয়মিত উপসর্গের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া:
কিছু ব্যক্তির গ্যাসের ওষুধের নির্দিষ্ট উপাদানগুলিতে অ্যালার্জি হতে পারে। এই ওষুধগুলির অত্যধিক গ্রহণ করলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে যা হালকা ত্বকের ফুসকুড়ি থেকে গুরুতর অ্যানাফিল্যাক্সিস পর্যন্ত হতে পারে।
ওষুধের মিথস্ক্রিয়া:
গ্যাসের ওষুধের অত্যধিক ব্যবহার ওষুধের মিথস্ক্রিয়াগুলির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। বিশেষ করে যদি ব্যক্তি একই সাথে অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করে। অতিরিক্ত গ্যাস-বিরোধী ওষুধ ব্যবহার করার আগে অন্যান্য ওষুধের সাথে সম্ভাব্য মিথস্ক্রিয়া পরীক্ষা করা তাই জরুরি।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইরিটেশন:
কিছু অ্যান্টিগ্যাস ওষুধ বিশেষ করে যেগুলি অ্যাসপিরিনের মতো যৌগ রয়েছে যা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে পেট এবং অন্ত্রের আস্তরণে জ্বালাতন করতে পারে। এটি গুরুতর ক্ষেত্রে প্রদাহ, আলসার বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রক্তপাত হতে পারে। এটি অনেক সময় রোগ নির্ণয়ে অসুবিধা করে যা চিকিৎসায় বিলম্বিত হতে পারে। যদিও গ্যাস-বিরোধী ওষুধগুলো মাঝে মধ্যে গ্যাস এবং ফোলাভাব থেকে রক্ষা করতে পারে। তবে এর সঠিক মূল্যায়ন এবং পরিচালনার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই ওষুধ সেবন করা স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
বিষয়: গ্যাসের ওষুধ
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।