সত্তরের নির্বাচনের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত
ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ ডাকঘর সত্তরের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনের সুবর্ণ জয়ন্তী” উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটাকার্ড প্রকাশ করেছে। এ উপলক্ষে একটি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করা হয়েছে।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকায় তার দপ্তরে দশ টাকা মুল্যমানের স্মারক ডাকটিকেট ও দশ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং পাঁচ টাকা মুল্যমানের ডাটাকার্ড প্রকাশ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ বিষয়ে একটি বিশেষ সীলমোহর ব্যবহার করা হয়। মন্ত্রী দিবসটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন, দেশব্যাপী গণআন্দোলন এবং আইয়ুব খানের পতনের পর ইয়াহিয়া খানের নতুন সামরিক শাসনের অধীনে ১৯৭০ সালে ৭ ডিসেম্বরে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সত্তরের সাধারণ নির্বাচন ছিল পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙালি মননে বিসুভিয়াসের অগ্নি-উগারী বান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ২৩ বছরের সংগ্রামে অর্জিত বিশাল বিজয়ের আনন্দ স্রোতধারায় সাধারণ মানুষকে মাতিয়ে তোলেন। বাঙালির সামনে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা পূরণের মাহেন্দ্রক্ষণটি প্রতিয়মান হয়ে উঠে সত্তরের নির্বাচনের বিপুল ব্যবধানে বিজয়ের মধ্য দিয়ে। প্রতিমুহুর্তে বাঙালির হৃদয়ে স্পন্দিত হয়ে উঠে আসে স্বাধীনতার সূর্য। বস্তুত ৭০ এর নির্বাচনেই বাঙালী তার স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে নিরঙ্কুশ রায় প্রদান করে। বঙ্গবন্ধুর নৌকা মার্কা হয়ে ওঠে স্বাধীনতার প্রতীক। মন্ত্রী বলেন আমরা তখন শ্লোগান দিয়েছি নৌকা মার্কায় ভোট দিন বাংলাদেশ স্বাধীন করুন।
সত্তরে উত্তাল দিনগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, রাজপথের লড়াকু সৈনিক জনাব মোস্তাফা জব্বার তার স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি রমনা রেসকোর্স ময়দানে আওয়ামী লীগের এমপিএ ও এমএনগণ বঙ্গবন্ধুর কাছে শপথ গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলার মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। নির্বাচনের পর সেটি আরও উজ্জ্বলভাবে ভাস্বর হয়ে ওঠে।
তিনি যে জনগণকে তিলে তিলে সংগঠিত করেছেন, তিনি সেই জনতার মনের অনুভূতি জানতেন। নির্বাচনের আগে বিদেশী সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুকে সত্তরের নির্বাচেনের ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলেন, “আপনি কয়টি আসনে জয়ী হবেন বলে আশা করছেন?’’ বঙ্গবন্ধু দৃঢ়তার সাথে উত্তর দিয়েছিলেন“ আমি অবাক হবো, যদি আমি দুটি আসনে হেরে যাই।”
আশ্চর্য ঘটনা হলো, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসনে বিজয়ী হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জিতেও বাঙালিরা যখন সরকার গঠন করতে পারেনি, তখনই দানা বাঁধা ক্ষোভ পরিণত হয় আগ্নেয়গিরিতে। এরই ধারাবাহিকতায় শহীদের রক্তস্নাত পথ বেঁয়ে জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাংলাদেশ। সত্তরের সাধারণ নির্বাচন বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ইতিহাসের অনন্য এক মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
এনএফ৭১/আরআর/২০২০
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।