পুলিশী রিহ্যাব সেন্টারে আদম তমিজী

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:০৮

ছবি: সংগৃহীত

আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হককে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রিহ্যাব সেন্টারে পাঠিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ রবিবার ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গতকাল শনিবার রাতে তমিজীকে তাঁর গুলশানের বাসা থেকে আটক করে ডিবির একটি দল।

ডিবি সূত্র জানিয়েছে, আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ একটি সার্চ ওয়ারেন্ট আছে।

এ ছাড়া, দেশের পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলা, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্যসহ বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে। আটকের পর প্রাথমিকভাবে তাঁকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

ডিবিপ্রধান বলেন, আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা হয়েছে। এছাড়া রমনা থানায় তার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু রয়েছে। সবকিছু মিলে গতকাল গ্রেপ্তার করেছি। আদম তমিজী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে বিভিন্ন ধরনের অসংলগ্ন কথা বলেছেন। তিনি যে দেশে খেয়ে পড়ে মানুষ হয়েছেন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যে দেশে আছে সেই দেশেরই পাসপোর্টটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে পুড়িয়ে ফেলেছেন।

তিনি ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছেন তাকে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধার করার জন্য। মার্কিন মেরিন সেনাকে বলছেন সরকার তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাকে উদ্ধার করার জন্য। আরও বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, সেটিও আপনারা দেখেছেন।

হারুন বলেন, আসলে এসব কথা শুনে আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, আসলেই তিনি কী মানসিক ভারসাম্যহীন। তা না হলে একটি লোক এভাবে কথা বলে কেন? তিনি অনেকগুলো বিয়ে করেছেন, পারিবারিক অনেক সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন কারণেই মনে হয়েছে তিনি ভারসাম্যহীন।

ভারসাম্যহীন এটা তো আমরা বলতে পারছি না। তাই তিনি যদি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে থাকেন তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাকে ডাক্তারের কাছে পাঠিয়েছি। সেখানে ডাক্তাররা আছেন। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি যদি মানসিকভাবে ঠিক থাকেন তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

তিনি বলেন, যদি ডাক্তাররা বলেন পুরোপুরি ভারসাম্যহীন কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীন, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যদি করে থাকেন তাহলে এর পেছনে কেউ আছেন কি না, সেটা তদন্ত করে বের করা হবে।

ডিবিতে নেওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমাকে অনেক সম্মান দিয়ে ডিবিতে আনা হয়েছে। আই অ্যাম হ্যাপি। এর আগে,  গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজী হক। ২০২০ সালে তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্যও ছিলেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বরে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের পাসপোর্ট পুড়িয়ে এবং আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন। এ ঘটনায় তাকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সবশেষ গত ১৩ নভেম্বর এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে ফেরেন আদম তমিজী। সে সময় এক ফেসবুক পোস্টে জানান, হক গ্রুপ এবং শ্রমিক-কর্মীদের রক্ষায় দেশে ফিরেছেন তিনি। এরপর গত ১৫ নভেম্বর তার গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সে সময় র‌্যাব জানায়, তমিজীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top