আজ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ

আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় প্যান প্যাসিফিক হোটেলে ইশতেহার ঘোষণা করবেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবারের ইশতেহার দ্রব্যমূল্য কমানো, আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফেরানো, কর্মসংস্থান বাড়ানোসহ বেশ কিছু খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইশতেহারে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের বদলে যাওয়া দৃশ্যপট রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি অগ্রাধিকারসহ তুলে ধরা হয়েছে আগামী নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার নির্বাচনী ইশতেহারে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে- দ্রব্যমূল্য কমানো ও সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, ব্যাংকসহ আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা, লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পের প্রসারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা, সাম্প্রদায়িকতা ও সব ধরনের সন্ত্রাস রোধ করা এবং সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার।

ইশতেহার কমিটির সদস্য সচিব এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘এবারের ইশতেহারের মূল থিম ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ। পাশাপাশি তরুণ ভোটারদের কীভাবে কাছে টানা যায়- তা ইশতেহারে প্রাধান্য পেয়েছে।

এছাড়াও গুরুত্ব পেয়েছে কৃষি, সেবা, অর্থনৈতিক ও শিল্প উৎপাদন খাত। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মৌলিক অধিকারও নিশ্চিত করা হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের বিষয়গুলো ইশতেহারে স্থান পেয়েছে।’

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক জানান, গণমানুষের দল আওয়ামী লীগের ইশতেহার শুধু একটি দলীয় ইশতেহার নয়। এটি প্রকৃত অর্থে পুরো জাতির ইশতেহার। আসন্ন নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করছে, তা দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগে আওয়ামী লীগ তার প্রতিটি নির্বাচনী ইশতেহারে জাতিকে দেওয়া অঙ্গীকার শতভাগ প্রতিপালন করেছে। শুধু তা-ই নয়, আওয়ামী লীগ প্রতিটি ইশতেহারে সরকারের নির্দিষ্ট মেয়াদের বাইরে দীর্ঘমেয়াদি নানা উন্নয়নের পথনকশা তৈরি করেছে। এর প্রতিটি অত্যন্ত সুচারুভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।

তিনি বলেন, এবারও নির্বাচনী ইশতেহার হবে স্মার্ট এবং গণমুখী। স্মার্ট বাংলাদেশের মাধ্যমে মানুষের কাছে আধুনিক প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি দৃশ্যমান যে উন্নয়নগুলো হয়েছে, তার মাধ্যমে আগামী দিনে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।

আগামী দিনে যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই হবে এবারের মূল প্রতিপাদ্য। স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য হবে শিল্পকারখানা স্থাপন করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং মানুষের আয় বৃদ্ধি করা।

এর আগে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে আহ্বায়ক করে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু করে ২৫ সদস্যের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি। কমিটির তৈরি খসড়া থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তৈরি হয়েছে চূড়ান্ত ইশতেহার।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের স্লোগান ছিল ‘দিন বদলের সনদ’। এরপর ২০১৪ সালে ছিল ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’। ২০১৮ সালে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটির ইশতেহারে স্লোগান ছিলো, ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’।