নারী উত্যক্ত প্রতিরোধ দিবস আজ

সুজন হাসান | প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২৪, ১৩:২৩

ছবি: সংগৃহীত

নারী উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধ বা ইভ টিজিং প্রতিরোধ দিবস আজ। নারী, মেয়েশিশু, কিশোরী এবং তরুণীদের উত্ত্যক্ত করার জন্য বখাটেদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছর ১৩ জুন ইভ টিজিং প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়।  

নারী-পুরুষ দুজনেই সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অথচ নারীরা এ সমাজে আজো যৌন নিপীড়নের শিকার। প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিকভাবে অপদস্ত হতে হচ্ছে তাদের। ইভটিজিং প্রতিরোধ দিবস আজ।

ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে যৌন নিপীড়নের মতো ভয়াবহ ব্যাধি থেকে নারীসমাজকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩ জুনকে ইভটিজিং প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং ২০১০ সাল থেকে নিজস্ব কার্যক্রম নিয়ে জাতীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছে দিনটি।  

ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে যৌন নিপীড়নের মতো ভয়াবহ ব্যাধি থেকে নারীসমাজকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩ জুনকে ইভটিজিং প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং ২০১০ সাল থেকে নিজস্ব কার্যক্রম নিয়ে জাতীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছে দিনটি।   

দেশে বিভিন্ন সময় নারী ও কিশোরীদের রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রেও উত্ত্যক্তের শিকার হতে হচ্ছে। উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে অনেক মেয়ের ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নেন।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বখাটদের দমন করা যাবে না। ইভ টিজিং প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। 

সমাজে ইভটিজিং বন্ধ না হওয়ার মূল কারণ হিসেবে গবেষকরা মনে করেন, ইভটিজাররা অপরাধ করেও বারবার পার পেয়ে যাওয়ায় আবারও ইভটিজিংয়ে জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য সামাজিক অব্যবস্থাও অনেকাংশে দায়ী।

ইভটিজিং প্রতিরোধে বাংলাদেশে অনেক আইন ও অপরাধীদের জন্য দণ্ডাদেশ চালু রয়েছে। যেমন-

১। দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ২৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি প্রকাশ্যে অশ্লীল কার্য করে বা অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করে তবে তার ৩ মাস কারাদণ্ড অথবা আর্থিক জরিমানা হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে কেউ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

২। একই সালের দণ্ডবিধি আইনের ৩৫৪ ধারায় বলা হয়েছে, নারীর শালীনতা নষ্ট করার উদ্দেশ্য বা সে চেষ্টায় বলপ্রয়োগ করতে চাইলে অপরাধী ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

৩। একই সালের দণ্ডবিধি আইনের ৫০৯ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি নারীকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে অশ্লীল কথা বলে কিংবা অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে তবে সে ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

৪। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশে ২টি আইন রয়েছে। এর ৭৫ ধারায় বলা হয়েছে, সমাজে অশালীন বা উচ্ছৃঙ্খল আচরণের শাস্তি হিসেবে ৩ মাস মেয়াদ পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে এবং ৭৬ ধারায় বলা হয়েছে, নারীকে উত্যক্ত কিংবা অপমান করে এমন কাজ করলে তিনি ১ বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ড অথবা ২ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

৫। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯ ধারা অনুযায়ী, কোনো নারী বা শিশুর শালীনতা নষ্ট করতে চাইলে অপরাধীর ৫ থেকে ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি অর্থ দণ্ডেও দণ্ডিত হতে পারেন। আর যদি কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করা হয় তবে সে অপরাধী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ধর্ষণ-পরবর্তী নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে যাবজ্জীবন সশ্রম করাদণ্ডের সঙ্গে অতিরিক্ত অন্যূন ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডেরও বিধান রয়েছে। 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top