ভারতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক নিয়ে মিথ্যাচার করছে বিএনপি

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২৪, ১৭:২৫

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা অপপ্রচার কর‌ছেন, এ অভিযোগ ক‌রে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ব‌লে‌ছেন, বিএন‌পির মহাস‌চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও যুক্ত হয়েছেন সেই অপপ্রচারে। গতকাল তিনি একটি প্রেস কনফারেন্সে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলো একেবারেই অসত্য এবং ডাহা মিথ্যা কথা।

সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদকিদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে ভারত সফর করেন। সেখানে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক সই করেন। সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু মূলধারার গণমাধ্যমে বেশ কিছু ভুল তথ্য এসেছে। এসব বিষয় নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ গত রবিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামও সেই অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা একেবারে অসত্য ও ডাহা মিথ্যা। সমঝোতা স্মারকের সব ধারা তিনি হয়তো পড়েননি। তিনি সব ধারা না পড়ে, না বুঝে, খণ্ডিতভাবে পড়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন।’

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘বাংলাদেশের বুক চিড়ে ভারতীয় ট্রেন এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাবে। কিন্তু এ সমঝোতা স্মারকে এটিও বলা আছে, ভারতের ওপর দিয়েও বাংলাদেশের ট্রেন নেপাল ও ভুটানে যাবে।

নেপাল ও ভুটান থেকে বাংলাদেশের ট্রেন ও তাদের ট্রেন ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এসে মোংলা কিংবা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করবে। তারা এখন কলকাতা বন্দর ব্যবহার করে। অর্থাৎ আমাদের বন্দরগুলোকে আমরা লাভজনক করব। তাহলে আপনি বলবেন-ভারতের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি হয়ে গেল? তারা নিজেদের কলকাতা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের বন্দর লাভজনক করে দিচ্ছে? বিষয়টি হচ্ছে আঞ্চলিক সহযোগিতার।’

তিনি বলেন, ‘সমঝোতা স্মারকে একটা বিশাল অর্জন আছে। নেপাল থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে ভারতের যে গ্রিড লাইন, সেই গ্রিডের ট্রান্সমিশন লাইন দিয়ে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট আমদানি করা হবে। শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে, তখন অতিরিক্ত উৎপাদন করে রপ্তানিও করতে করা যাবে।’

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন কী বলবেন ভারতের বুক চীরে বাংলাদেশ নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনবে এবং বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে? এখানে তো পুরোটাই আমরা লাভবান হব। সে জন্য এই সমঝোতা স্মারকের বিষয়গুলো একেবারে উল্লেখ না করে, এটি যে দুই দেশের জন্য লাভজনক সেটি উল্লেখ না করে, খণ্ডিতভাবে তারা অপপ্রচারের স্বার্থে মিথ্যাচার করছে।’

তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলসহ অনেকে বলছেন- দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। কীভাবে? ভারতের ট্রেন যে যাবে, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সেখানে নাকি আর্মি এবং মিলিটারি সামরিক অস্ত্র নিয়ে যেতে পারে। তাতে জিওপলিটিক্যাল ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে। অথচ এই সমঝোতা স্মারকের তিন নম্বরে বলা আছে- গুডস উইদাউট রেড ট্রাফিক। সেখানে সংজ্ঞা দেওয়া আছে-ডেঞ্জারাস এবং অফেন্সিভ গুডস, ইনক্লুডিং আর্মস অ্যান্ড এক্সক্লুসিভস। অর্থাৎ এগুলো নেওয়া যাবে না।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গোটা বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে রিজিওনাল কানেকটিভিটির মাধ্যমে। আমরা কিন্তু এটা এককভাবে ভারতকে দিইনি। সেটিকে তারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে। এটা কীভাবে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি হলো? মূলত বিএনপির চিন্তা নতজানু।’

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top