স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, এ ধরনের দলকে সমর্থন নয়: মির্জা ফখরুল

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৫

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমার বাংলাদেশের স্বাধীনতাই বিশ্বাস করে না, সে ধরনের দলকে তো সমর্থন করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘তবে আমরা মনে করি মানুষের অধিকার আছে একটা সংগঠন তৈরি করার, রাজনীতি করার।’ বুধবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার আদেশটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে—এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কোনও রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে না, সে যে দলই হোক। আমাদের সংবিধানে যেকোনও ব্যক্তির অধিকার রয়েছে সংগঠন করার। কিন্তু স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে থাকতে হবে।’

মির্জা ফখরুলের দাবি, ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আপনারা দেখবেন, বিদেশ থেকে, বিশেষ করে ভারত থেকে এমন কতগুলো প্রচারণা চালানো হচ্ছে- যা বাংলাদেশে যে বিপ্লব, সেটাকে তারা নস্যাৎ করতে চায়। কতগুলো রাজনৈতিক ইস্যুকে তারা সাম্প্রদায়িক ইস্যু বানাতে চায়। যেটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘প্রথম দিকে তারা যে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রচার চালিয়েছিল, এটা বোধহয় এক-দুই পারসেন্টও সঠিক নয়। দ্বিতীয়ত হচ্ছে দখলদারি। এগুলো কিন্তু একটা ক্যাম্পেইন। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, আবারও আগের মতো, এক-এগারোর মতো বিএনপিকে লক্ষ্য করে এ কাজগুলো করা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত অন্যায়। আমরা ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করেছি গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য। মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্রে নির্বাচিত সংসদ ছাড়া কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।’

২০০৭ সালের সেনা-সমর্থিত এক-এগারোর সরকারের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তো ভুলে যাইনি এক-এগারোর সময় কারা চেষ্টা করেছিল বিরাজনীতিকীকরণের। এমনকি ওই সময়ে আমাদের দলকে পর্যন্ত পুরোপুরি বাতিল, নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টাও হয়েছিল। এ কথাগুলো তো আমরা ভুলতে পারি না।’

অন্তর্র্বতী সরকারকে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য বিএনপি ‘যৌক্তিক’ সময় দেওয়ার কথা বলেছে, এমনটি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই জন্যই আলোচনা দরকার। যৌক্তিক সময়ের ধারণা নির্ভর করবে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে। আমরা কী চাই, ওনারা কী চান, জনগণ কী চায়, একটা আলাপ–আলোচনা তো হতে হবে। সে জন্য বলেছি, বর্তমান সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর অতি দ্রুত আলোচনা হওয়া দরকার। খুব জোর দিয়ে বলেছি, আজকেও বলছি। নইলে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি যদি মনে করি একজন ব্যক্তি একেবারে স্বর্গ বানিয়ে দিতে পারবে, আমার ওই চিন্তাটা সঠিক হবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে দেশ কীভাবে চলবে। সংস্কারের দাবি তো আমরাই তুলেছি। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। ৩১ দফা থেকে কমিয়ে ১০ দফা হয়েছে, ১০ দফা থেকে এক দফা হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি, সারা বাংলাদেশ চষে বেড়িয়েছি। আমরা তো সংস্কার চাই। তবে সেই সংস্কারটা অবশ্যই হতে হবে জনগণের সমর্থন নিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ এখানে একটা ডেমোক্র্যাটিক সেটআপ চায়, গণতন্ত্র চায়। মানুষ নির্বাচন চায়। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।’ বর্তমান সরকারের মধ্যেও বিরাজনীতিকীকরণের কোনও লক্ষণ দেখছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘না, আমি এমন লক্ষণ দেখছি না। আমি সতর্ক করছি। আমার একটা সতর্কের কথা আছে। কিছু চেহারা আছে তো? এই চেহারাগুলোকে দেখলে আমরা ভয় পাই।’

এ সময় যাদের কোনও দিন দেখা যায়নি, তারা সামনে চলে আসছেন বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে তারা মিডিয়াতে ফ্রন্ট পেজে চলে আসছেন। তাদের বক্তব্য, থিওরি প্রচার করছেন। আমি কারও নাম বলতে চাই না। আমার মনে হয়, এটা সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ভালো বিষয় নয়।’

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top