সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২

নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যৌথ অভিযান শুরু, ওসমান হাদি হত্যায় ৬ জন আটক

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫১

ছবি: সংগৃহীত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, ভোটার, প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে সারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রোববার (গতকাল) রাজধানীর নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বৈঠকে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড এবং সারাদেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিষয়ে তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও বিশদ আলোচনা হয়। নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নের জবাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, এ পর্যন্ত ছয়জনকে আটক (গ্রেপ্তার) করা হয়েছে, যাদের সবাই কোনো না কোনোভাবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে পালিয়ে যেতে একজন সহযোগিতা করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই তিনজনকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধান ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র‍্যাব, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া চার নির্বাচন কমিশনার—আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন,

“মেসেজ ক্লিয়ার—কাউকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে দেওয়া হবে না। যারা দস্যুতা করতে চায়, যারা মানুষ হত্যা করতে চায় কিংবা নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের প্রতি মানবিক হওয়া হবে না।”

তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করে—এমন যেকোনো কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ইসি সানাউল্লাহ জানান, এখন থেকে মাঠপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান জোরদার করা হবে। অভিযানের মূল লক্ষ্য হবে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের আইনের আওতায় আনা।

তিনি বলেন,

“আমরা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছি—নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনে বাহিনীগুলো বাধা দিতে যা করার দরকার, তাই করবে।”

নির্বাচন কমিশনার আরও জানান, এলাকাভিত্তিক চেকপোস্ট স্থাপন করে চেকপোস্ট অপারেশনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় অস্ত্রের আনাগোনার তথ্য রয়েছে এবং দুর্গম এলাকাগুলোতে নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হবে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ইতোমধ্যে একটি নির্দিষ্ট প্রটোকল প্রণয়ন করেছে বলে জানান ইসি সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা ঘাটতি অনুভব করলে সংশ্লিষ্টরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রতিক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top