অস্ত্র ও সংঘর্ষের কাছে ব্যর্থ হয়েছে শান্তির রাজপুত্রের যুক্তি

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৪

ছবি: সংগৃহীত

খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শুভ বড়দিনে বিশ্বজুড়ে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। গতকাল রবিবার ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় বড়দিনের প্রাক্কালে দেওয়া ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

বড়দিন উপলক্ষে বক্তব্য দেয়ার সময় পোপ ফ্রান্সিস বলেন, আমাদের মন বেথেলহেমে পড়ে আছে; যেখানে আরও একবার অস্ত্র ও সংঘর্ষের কাছে শান্তির রাজপুত্রের নিরর্থক যুদ্ধের যুক্তি ব্যর্থ হয়েছে।

ক্যাথলিক এই ধর্মগুরু আরও বলেন, ক্রিসমাসের আসল বার্তা হল শান্তি এবং ভালোবাসা। মানুষকে জাগতিক সাফল্য এবং ভোগবাদের পূজাতে আচ্ছন্ন না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ইতিহাসের বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষেরা সব সময় বলেছেন, এই বিশ্ব পার্থিব শক্তি, ক্ষমতা, খ্যাতি এবং গৌরবে আচ্ছন্ন। যা সব সময় সাফল্য, ফলাফল, সংখ্যা এবং পরিসংখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে সবকিছু পরিমাপ করে। তবে আজকের এই রাতে ভালোবাসা ইতিহাস বদলে দেয়।

বেথেলহেম ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি শহর। খ্রীষ্টধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন আজ থেকে ২ হাজার বছর পূর্বে যিশু খ্রিস্ট এখানে জন্মগ্রহণ করেন। প্রতি বছরই মহাধুমধামে বড়দিন উদযাপিত হয় যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে। কিন্তু এ বছর সম্পূর্ণ ভিন্ন বেথেলহেমের চিত্র। হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে এবার জনশূন্য যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান।

তবে এবার যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় যিশুকে ইনকিউবেটরে থাকা শিশু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজার অসহায় শিশুদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার জন্যই এ শিল্পকর্ম করা হয়েছে। গাজার পশ্চিম তীরের বেথেলহেমের চার্চ অফ নেটিভিটির বাইরে শিল্পকর্মটি স্থাপন করা হয়েছে।

সেখানে একটি ইনকিউবেটরের ভেতরে লাল-সাদা রঙের কেফিয়াহ’র চাদরের ওপর ব্রোঞ্জের যিশুকে ভাস্কর্যরূপে তুলে ধরা হয়েছে। এ শিল্পকর্মটি করেছেন ফিলিস্তিনি শিল্পী রানা বিশারা এবং ভাস্কর সানা ফারাহ বিশারা।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এতে ১৪০০ ইসরায়েলি নাগরিক প্রাণ হারায় জবাবে গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে ১৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সামরিক হতাহত এড়াতে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হচ্ছিল।

২২ নভেম্বর মধ্যস্থতাকারী কাতার জানায়, বেশ কিছু শর্ত মেনে দুই পক্ষ রাজি হয়েছে। দুই দফায় বাড়া সেই যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকেই গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।







পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top