বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১

যে কারণে জান্নাতে কোন অবসাদ ও ক্লান্তি আসবে না

নিশি রহমান | প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০২৩, ২৩:৫০

প্রতীকী ছবি

যেকোনো বিষয়ের দীর্ঘসূত্রিতা মানুষকে ক্লান্ত করে তোলে। এক পরিবেশে দীর্ঘদিন থাকলে একঘেয়েমী  ও অবসাদ চলে আসে। কিন্তু জান্নাতে অনন্তকাল অবস্থান করলেও মুমিন অবসাদে ভুগবে না, তার ভেতর কোনো ক্লান্তি আসবে না। কিন্তু কেন? নিম্নে কোরআন-হাদিসের আলোকে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো___

আরও পড়ুন>>> ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ২৫ বাইকারের ওমরাহ যাত্রা

সর্বোত্তম আবাস : জান্নাত আল্লাহর সৃষ্টিজগতে মানুষের জন্য সর্বোত্তম আবাস। তাই কোনো মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করার পর সে আর অন্য কোথাও স্থানান্তরের ইচ্ছা করবে না। তার সামনে এর থেকে উত্তম কোনো উপমা না থাকায় তার ভেতর বিতৃষ্ণাও তৈরি হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের আপ্যায়নের জন্য আছে ফিরদাউসের উদ্যান, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। তা থেকে স্থানান্তর কামনা করবে না।’

নতুনত্ব শেষ হবে না : আল্লাহ জান্নাতের নেয়ামতগুলো এমনভাবে প্রস্তুত করেছেন যে তার স্বাদ ও তৃপ্তি কখনো শেষ হবে না। এমনকি অনন্তকালেও তার নতুনত্ব শেষ হবে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে তাদের সুসংবাদ দাও যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত। যখনই তাদের ফলমূল খেতে দেওয়া হবে, তখনই তারা বলবে, আমাদের আগে জীবিকারূপে যা দেওয়া হতো এটা তো তাই। তাদের অনুরূপ ফলই দেওয়া হবে । এবং সেখানে তাদের জন্য আছে পবিত্র সঙ্গিনী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে।

শারীরিক কাঠামোর উন্নয়ন : কোনো সন্দেহ নেই ক্লান্তি ও অবসাদ শারীরিক অক্ষমতার নিদর্শন এবং একটি ব্যথার অনুভূতি। এ জন্য শারীরিকভাবে শক্তিমান ব্যক্তি তুলনামূলক কম ক্লান্ত হয়। পরকালে আল্লাহ মানবদেহের কোনো দুর্বলতা রাখবেন না। তাদের পরিপূর্ণরূপে সুঠাম ও শক্তিশালী করবেন। ফলে জান্নাতিরা কখনো অবসাদে ভুগবে না। আমর ইবনুল আস (রা.) বলতেন, ‘ক্লান্তি ও অবসাদ মানবচরিত্রের প্রবঞ্চনা মাত্র।’

ভিন্ন জগৎ, ভিন্ন জীবন : জান্নাতে মুমিনদের জীবন পার্থিব জীবন থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে, যা পার্থিব জীবনের সঙ্গে কোনোভাবেই তুল্য নয়। জান্নাতের প্রতিটি বিষয় হবে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। যেমন: পার্থিব জীবনে মানুষ মদ পান করলে নেশাগ্রস্ত হয় এবং ভারসাম্য হারায়। কিন্তু জান্নাতে আল্লাহ এমন মদ সৃষ্টি করবেন, যাতে নেশা থাকবে না। আল্লাহ বলেন, ‘সেই শুরা পানে তাদের শিরঃপীড়া হবে না, তারা জ্ঞানহারাও হবেন না।’

অনুকূল পরিবেশ : মানুষের ভেতর তখনই অবসাদ ও ক্লান্তি আসে যখন সে প্রতিকূল পরিবেশে থাকে। যেখানে মানবপ্রকৃতির প্রতিকূল বিষয় থাকে। জান্নাতে সব কিছুই জান্নাতিদের অনুকূল থাকবে। তাই সে কখনো ক্লান্ত হবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জান্নাতিরা জান্নাতে পানাহার করবে। তবে থু থু ফেলবে না, প্রস্রাব-পায়খানা করবে না এবং নাকও ঝাড়বে না। এ কথা শুনে সাহাবিরা বললেন, তবে ভক্ষিত খানা যাবে কোথায়? উত্তরে  রাসুলুল্লাহ (সা.)  বললেন, এক ঢেঁকুরে শেষ হয়ে যাবে। তাদের শরীরের ঘাম মিশকের মতো সুঘ্রাণ যুক্ত হবে। আল্লাহর পবিত্রতা এবং প্রশংসা তাদের অন্তঃকরণে এভাবে দেওয়া হবে, যেভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হয়।’




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top