জেনে নিন মানবজীবনে তাওবার সুফল
নিশি রহমান | প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০১:৫৭
পাপমুক্ত জীবন গঠন ও আল্লাহর নৈকট্য লাভে তাওবার কোনো বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনের বহুসংখ্যক আয়াতে মুমিনদের তাওবার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তার কয়েকটি নিম্নে তুলে ধরা হলো___
আল্লাহই ক্ষমাকারী : যত পাপই হোক না কেন, আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করবেন। কেননা তিনি অতিশয় দয়ালু। ইরশাদ হয়েছে, ‘কিন্তু যারা তাওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে আর সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে, এরাই তারা যাদের তাওবা আমি কবুল করি, আমি অতিশয় তাওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।’
আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালোবাসেন : যারা পূতঃপবিত্র জীবনযাপন করে এবং পাপ থেকে তাওবা করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকে ভালোবাসেন।’
আরও পড়ুন>>> ৪০ বছর ধরে মুসল্লিদের খেজুর উপহার দেন যে সিরিয়ান বৃদ্ধ
পাপ পরিহার আবশ্যক : তাওবা কবুলের জন্য পাপ পরিহার করা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তারা তাওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে তা থেকে নিবৃত্ত থাকবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম তাওবা কবুলকারী ও পরম দয়ালু।’
মৃত্যুর আসার আগে তাওবা : মৃত্যুর সময় উপস্থিত হওয়ার আগেই তাওবা করতে হবে। নতুবা আল্লাহর দরবারে তাওবা কবুল হবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাওবা তাদের জন্য নয়, যারা আজীবন মন্দ কাজ করে, অবশেষে তাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হলে সে বলে, আমি এখন তাওবা করছি। আর তাদের জন্যও নয়, যাদের মৃত্যু হয় অবিশ্বাসী অবস্থায়। এরাই তারা যাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তির ব্যবস্থা আছে।’
তাওবাকারী জন্য উত্তম প্রতিদান : আল্লাহ তাওবাকারীকে শুধু ক্ষমা করেন না; বরং তাদের জন্য আছে উত্তম প্রতিদান। আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু যারা তাওবা করে, নিজেদের সংশোধন করে, আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাদের দ্বিনে একনিষ্ঠ থাকে, তারা মুমিনদের সঙ্গে থাকবে এবং মুমিনকে আল্লাহ অবশ্যই মহাপুরস্কার দেবেন।’
ক্ষমার দুয়ার সব সময় খোলা : ব্যক্তি যত পাপ করুক না কেন আল্লাহর দরবারে তার জন্য ক্ষমার দুয়ার সব সময় খোলা থাকে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তারা নিজেদের প্রতি জুলুম করে, তখন তারা তোমার কাছে এলে ও আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং রাসুলও তাদের জন্য ক্ষমা চাইলে তারা অবশ্যই আল্লাহকে পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালুরূপে পাবে।’
তাওবাকারীর জন্য সুসংবাদ : আল্লাহ তাওবাকারী মুমিনদের সুসংবাদ প্রদান করে বলেছেন, ‘তারা তাওবাকারী, ইবাদতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, রোজা পালনকারী, রুকুকারী, সিজদাকারী, সৎকাজের নির্দেশদাতা, অসৎকাজে নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা সংরক্ষণকারী; এই মুমিনদের আপনি সুসংবাদ দিন।’
তাওবা পার্থিব জীবনেও প্রাচুর্য আনে : তাওবা শুধু মানুষ পরকালীন জীবনকেই সুন্দর করে না; বরং তা পার্থিব জীবনেও প্রাচুর্য আনে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কোরো, অতঃপর তাঁর দিকেই ফিরে এসো। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তিনি তোমাদের আরো শক্তি দিয়ে তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন। তোমরা অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না।’
তাওবাকারীদের জন্য জান্নাত : আল্লাহ তাওবাকারীদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কোরো—বিশুদ্ধ তাওবা; সম্ভবত তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের মন্দ কাজগুলো মোচন করবেন এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত।’
আল্লাহ সবাইকে তাওবা করার তাওফিক দিন। আমিন।
বিষয়: তাওবা মানবজীবন কোরআন newsflash71 Update News News
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।