আহলান সাহলান মাহে রমজান
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:১১
রমজান শব্দটি রামাজ ধাতু থেকে এসেছে। এর শাব্দিক অর্থ হলো পুড়ে যাওয়া বা দগ্ধ হওয়া। কুরআনিক শব্দ হলো সিয়াম। সিয়ামের আভিধানিক অর্থ হলো বিরত থাকা, বিরত রাখা। রোজা ফার্সি শব্দ।
ইসলামী শরিয়তের ভাষায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব প্রকার খাদ্য, স্ত্রী সম্ভোগ ও রোজা ভঙ্গ করতে পারে এমন সব কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকাকে বলে সাওম বা রোজা পালন। সিয়াম হলো সাধনার বিষয়।
১৫-১৬ ঘণ্টা রোজা থেকে এবং শরীরের সব অঙ্গকে নিয়ন্ত্রণ করে নফসকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ভালো মানুষ তৈরির এক সুযোগ সৃষ্টি হয়। নফসের পরিশুদ্ধতার আবহ সৃষ্টি হয়। মহান আল্লাহ পাক বলেছেন- ‘যে নফসকে পরিশুদ্ধ করতে পেরেছে সে সফল হয়েছে’। আর অন্য কোনো উপায়ে দেহ, মন, আত্মার সুসমন্বয় হয় না। এটিই রোজার গূঢ় রহস্য।
শরিয়তে রোজার যে বিধান দেওয়া হয়েছে, তার অনুরূপ বিধান যুগে যুগে বিভিন্ন ধর্মেও দেখা যায়। যেমন—
১. ব্রাহ্মণদের মধ্যে চান্দ্রমাসের ১১ ও ১২ তারিখ একাদশীর উপবাস প্রচলিত ছিল এবং এখনো আছে।
২. সনাতন ধর্মাবলম্বী যোগীদের মধ্যে ৪০ দিন উপবাসসহ নানা রীতিতে ভোজনে সংযম প্রচলিত।
৩. জৈন ধর্মাবলম্বীরা বার্ষিক আরাধনার সময় সপ্তাহব্যাপী উপবাস করেন।
৪. বৌদ্ধ ধর্মে পানাহার বর্জন, নারীসঙ্গ ত্যাগের রীতি প্রচলিত।
৫. প্রাচীন মিসরীয় ধর্মে উপবাসের বিধান ছিল এবং ফারাও শাসকরা তা মেনে চলত।
৬. পার্সিয়ান (অগ্নিপূজক) ধর্মগুরুদের জন্য পাঁচশালা উপবাসব্রত ছিল বাধ্যতামূলক।
৭. প্রাচীনকালে চীনারা টানা কয়েক সপ্তাহ উপবাস করত।
৮. প্রাচীন গ্রিকদের হিসমোফিরীয় সম্প্রদায়ের শুধু নারীদের মধ্যে উপবাসরীতি প্রচলিত ছিল।
পবিত্র কোরআনের আয়াত থেকে অতীতের রোজা বা উপবাসের ধারণা পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল, যেন তোমরা ধর্মভীরু হতে পারো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।