ভেঙে পড়েছে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য সেবা

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক | প্রকাশিত: ৬ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৪৪

ভেঙে পড়েছে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য সেবা

জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদির তীব্র ঘাটতি দেখা দেওয়ায় শ্রীলঙ্কায় স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির শীর্ষ মেডিক্যাল সংস্থা মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) এ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।

নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিকভাবে ভুগতে থাকা দেশটিতে খাবার এবং জ্বালানির জন্য আন্দোলন শুরু করেছে সাধারণ নাগরিকরা। আন্দোলন এতোটাই তীব্র আকার ধারণ করেছে যে তা সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সরকারের ২৬ মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করেছেন।

শ্রীলঙ্কার গভার্মেন্ট মেডিক্যাল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (জিএমওএ) জানিয়েছে, সোমবার তারা ওষুধ ও বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামাদির সঙ্কট দেখা দেওয়ার বিষয়ে বৈঠক করে। বৈঠকের পর দেশ জুড়ে স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর অর্থ এখন থেকে জরুরি রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাবেন।

এর আগে সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, দেশ জুড়ে থাকা তাদের সদস্যভুক্ত হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও মেডিক্যাল সরঞ্জামাদির ঘটতির কথা জানায়। এমনকি হাসপাতালগুলো জরুরী রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বলেও জানায় তারা।

জিএমওএ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘সরকার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উভয়ই চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়া রোধ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি সরকার জনগণের বেঁচে থাকার অধিকার ও স্বাস্থ্যসেবার অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে পারেনি।

শ্রীলঙ্কার একটি সার্বজনীন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে। এখানকার সরকারি হাসপাতালগুলো নাগরিকদের দেওয়া করের টাকায় পরিচালিত হয়। যার অর্থ নাগরিকরা যে কোনো সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন।

এদিকে মঙ্গলবারও শ্রীলঙ্কার প্রধান শহরগুলোতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে চলা আন্দোলনে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছে।

স্বাধীনতার পর স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। বিদেশি মুদ্রার অভাবে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। দাম পরিশোধ করতে না পারায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে সিমেন্ট পর্যন্ত সব গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। লোকজনকে জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে। কাগজের অভাবে স্কুলের পরীক্ষা ও দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকটে এমনকি সড়কবাতিও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সূত্র: বিবিসি

এনএফ৭১/আরআর/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top