সোমালিয়ায় নিহত আল-শাবাব নেতা

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক | প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২২, ০৫:৫০

সোমালিয়ায় নিহত আল-শাবাব নেতা

আফ্রিকা মহাদেশভূক্ত দেশ সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর হারামকায় দেশটির সরকারের নির্দেশে পরিচালিত এক ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন আফ্রিকাভিত্তিক ইসলামি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আল-শাবাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী আবদুল্লাহি ইয়ারি।

সোমবার সোমালিয়া সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় এক বিৃবতিতেতে এই তথ্য জানিয়েছে। ‘আফ্রিকার আতঙ্ক’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই জঙ্গি নেতার মাথার দাম ৩০ লাখ ডলার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কুখ্যাত জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহি ইয়ারি নিহত হয়েছেন। হারামকা শহরে তিনি অবস্থান করছেন— এই তথ্য জানার পর প্রতিরক্ষা বাহিনী তার সম্ভাব্য অবস্থান লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায়। সেই হামলাতেই নিহত হয়েছেন তিনি।’

‘আবদুল্লাহি ইয়ারি আল-শাবাবের মূল নেতার দায়িত্বে ছিলেন। এই পদে আসার আগে তিনি এই গোষ্ঠীর সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা শুরা কাউন্সিলের সদস্য এবং অর্থায়ন ও তহবিল বিভাগের পরিচালক ছিলেন।’

২০০০ সালে সোমালিয়ায় গঠিত হয় ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী ‘হরকত আশ-শাবাব আল-মুজাহিদিন’। ২০০৫ সাল থেকে সোমালিয়ায় যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে, তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে গোষ্ঠীটির। সোমালিয়ার জঙ্গি নেতা আহমেদ দিরিয়ে এই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।

বর্তমানে সোমালিয়ার পাশাপাশি পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও সালাফিপন্থী এই গোষ্ঠীটির কার্যক্রম বিস্তৃত।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ডাকাতি, লুটপাট, হত্যা, বোমা হামলা, আত্মঘাতী বোমা হামলা, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, নারী ও কিশোরীদের অপহরণ করে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়াসহ অসংখ্য অপরাধে সংশ্লিষ্টতার গুরুতর অভিযোগ ছিল হরকত আশ-শাবাব আল-মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে। পরে ২০১২ সালে সৌদিভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল কায়দার সঙ্গে মিশে যায় এই গোষ্ঠীটি এবং পরিচিতি পায় আল-শাবাব নামে।

একই বছর এশিয়া ও আফিকা মহাদেশের ৭ জঙ্গিনেতাকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকাভূক্ত করে মার্কিন সরকার; এবং এই তালিকার প্রত্যেক নেতার মাথার দাম ঘোষণা করে। আবদুল্লাহ ইয়ারির মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ৩০ লাখ ডলার।

সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আল-শাবাবের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ দিরিয়ের ঘনিষ্ট সহযোগী ছিলেন আবদুল্লাহি ইয়ারি। সম্প্রতি তিনি গোষ্ঠীর মূল বক্তার দায়িত্বে ছিলেন এবং আহমেদ দিরিয়ের পর গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতৃত্বে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এক প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছে, সোমালিয়ার নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মাহমুদ ক্ষমতাসীন হওয়ার পরই জঙ্গিবাদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি দেশজুড়ে সর্বাত্মক জঙ্গি বিরোধী অভিযান শুরুরও নির্দেশ দিয়েছেন।

শনিবার থেকে শুরু হয়েছে এই অভিযান এবং তারপর গত ৩০ ঘণ্টায় রাজধানী মোগাদিসুসহ বিভিন্ন শহরে নিহত হয়েছেন মোট ২১ জন জঙ্গি। আবদুল্লাহি ইয়ারিও তাদের একজন।

সোমালিয়ার তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পায়ের কাঁটার মত যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠেছিলেন আবদুল্লাহি ইয়ারি। তার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে জাতি আজ কাঁটামুক্ত হলো।’

এনএফ৭১/আরআর/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top