কাতারে বিশ্বকাপ নিয়ে প্রশ্ন তোলায়
পশ্চিমাদের ‘ভন্ড’ বললেন ফিফা প্রেসিডেন্ট
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২২, ০৭:৫১
শ্রমিকদের প্রতি বিশ্বকাপ আয়োজক কাতারের আচরণের সমালোচনা করায় পশ্চিমাদের ভণ্ড বলে অভিযুক্ত করেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। শনিবার (১৯ নভেম্বর) দেশটির রাজধানী দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফিফা বস মনে করেন, মানবাধিকার উন্নয়নের একমাত্র পথ শ্রমিকদের কাজে ব্যস্ত রাখা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
তিনি বলেন, আমি ইউরোপিয়ান। আমরা অতীতে যা করেছি, এজন্য আগামী ৩ হাজার বছর মানুষের কাছে আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। এরপর নৈতিকতার শিক্ষা দেয়ার কথা বলতে হবে।
ফিফাকে ঘুষ দিয়ে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছে কাতার। এ আসরের ৮ ভেন্যু তৈরিতে শ্রমিকদের শোষণ করেছে দেশটির সরকার। তাদের নিয়মিত বেতন দেয়নি তারা।
এমনকি মারা গেলেও ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ইউরোপিয়ান ও পশ্চিমারা। মূলত এ কারণেই সমালোচনার শিকার হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষুদ্র দেশটি।
ইনফান্তিনো বলেন, এ সমালোচনার মানে খুঁজে পাই না আমি। কাতার শ্রমিকদের জন্য যেটুকু করেছে, আমরা সেটুকু করতে পারিনি। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উন্নত ভবিষ্যতের জন্য আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে। অনেক বিষয় ঠিক নেই, সেগুলো সংস্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, একপক্ষীয় নৈতিক শিক্ষা ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়। যেটা করে পশ্চিমারা। ১ যুগ আগে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সেজন্য এখন সমালোচনা কাম্য নয়। কাতার প্রস্তুত। আমি মনে করি, ইতিহাসের সবচেয়ে সফল বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট হবে এবার।
অ্যালকোহল নিষিদ্ধ নিয়ে যারা বেশি বেশি করছেন তাদেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন ইনফান্তিনো। তিনি বলেছেন, অ্যালকোহল নিষিদ্ধের বিষয়টি যদি বিশ্বকাপের জন্য অনেক বড় ইস্যু হয়, তাহলে আমি এখনই পদত্যাগ করব এবং সমুদ্র পাড়ে গিয়ে আরাম করব।
তিনি আরও বলেন, আমি সবাইকে জানাতে চাই সব সিদ্ধান্ত কাতার ও ফিফা যৌথভাবে নিয়েছে। বিশ্বকাপে অনেকগুলো ফ্যান জোন থাকবে যেখানে অ্যালকোহল পাওয়া যাবে এবং সেখানে বিয়ার পান করা যাবে। আমি মনে করি দিনে মাত্র তিন ঘণ্টা (ম্যাচের সময়) বিয়ার পান না করলে আপনারা বেঁচে থাকতে পারবেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ২০২১ সালে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে কাতারে স্টেডিয়াম বানাতে আসা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের ৬ হাজার ৫০০ অভিবাসী শ্রমিক মারা যান। কাতারে অবস্থিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল গার্ডিয়ান।
যদিও কাতার সরকার বলেছিল, তথ্যটি পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ যারা মারা গেছেন তারা সবাই স্টেডিয়াম নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।