হিজাব ইস্যুতে ইরানে অস্কারজয়ী অভিনেত্রী গ্রেপ্তার
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:২৭
অস্কারজয়ী অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে ইরান সরকার। দেশটিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টের কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া অভিনেত্রীর নাম তারানেহ্ আলিদুস্তি। ৩৮ বছর বয়সি এই অভিনেত্রীকে দেখা গিয়েছিলো ‘দ্য সেল্স্ম্যান’ ছবিতে। ২০১৬ সালে ছবিটি অস্কার পায়। এছাড়া ইরানের একাধিক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন আলিদুস্তি।
গত ৮ ডিসেম্বর একটি পোস্টে আলিদুস্তি লিখেছিলেন, ‘আপনার নীরবতা দমন এবং দমনকারীদের সমর্থনের সমান’।
যেদিন আলিদুস্তি এই পোস্ট করেন, সেদিনই ইরানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে প্রথম কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো। তিনি আরও লেখেন, এই নৃশংসতা যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দেখেও মুখ বুজে রয়েছে, তারা প্রত্যেকে মানবতার নামে লজ্জা।
এই পোস্টের কারণেই আলিদুস্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার তাকে হাতকড়া পরিয়েছে ইরান সরকার।
ইরানের বিনোদন জগতে রীতিমতো পরিচিত মুখ আলিদুস্তি। অনেক কম বয়স থেকে তিনি অভিনয় করছেন। তার সাম্প্রতিক ছবি ‘লেইলাস ব্রাদার’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। সফল এই ইরানি অভিনেত্রীর ৮০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে ইনস্টাগ্রামে।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতা বিষয়ক’ পুলিশ।
এই পুলিশের একটি দল, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় দেশজুড়ে। দেশটিতে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ গেছে কয়েকশ জনের। বিক্ষোভে অংশ নেন দেশটির তরুণ-তরুণীরা।
১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর ইরান সরকার এত বড় চ্যালেঞ্জের মুখে আর কখনই পড়েনি। ফলে বেশ কঠোরভাবেই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছে ইরান সরকার। বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে এ নিয়ে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিল ইরান সরকার।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।